মোবাইল কেনার আগে যা জানা উচিত, Mobile Buying Guide In BD
আমরা যখন যেখানে যাই না কেন মোবাইল আমাদের সাথেই থাকে এবং সেই মোবাইল কেনার আগে আমাদের আগে থেকেই অনেক তথ্য জেনে থাকার দরকার রয়েছে।
কল করা, ছবি তোলা, ইন্টারনেট ব্রাউজিং, গেম খেলা সহ আরো নানা প্রয়োজনে এই মোবাইল আমাদের সার্বক্ষণিক সঙ্গী সুতরাং মোবাইল কেনার আগে যাচাই বাছাই করে সব থেকে সেরাটা নির্বাচন করাই ভাল।
আপনার প্রয়োজন এবং বাজেটের মধ্যে সামঞ্জস্য রেখে একটা ভালো মোবাইল বেছে নিতে পারেন। এই লিখাটি পড়লে মোবাইল কেনার জন্য বেছে নেওয়ার জন্য যে সহযোগীতা বা ধারনা দরবার তা পাবেন।
মোবাইলের অপারেটিং সিস্টেমঃ
বাজারে কয়েক ধরনের অপারেটিং সিস্টেম এর মোবাইল পাওয়া যায় তার মধ্যে থেকে আপনি কোন ধরনের মোবাইল কিনবেন তা আগে চিন্তা করে নিবেন, যেমন আই ফোন, উইন্ডোজ ফোন পাওয়া যায় আবার অ্যান্ড্রুয়েট মোবাইলও পাওয়া যায়, স্মার্টফোনের এই বাজারে অ্যানড্রয়েড রাজত্ব করে বেড়াচ্ছে সারা পৃথিবী জুড়েই। অন্যান্য অপারেটিং সিস্টেমের মধ্যে অ্যান্ড্রোয়েট মোবাইলের : ডিজাইন, ডিসপ্লে সাইজ, স্পেস, ক্যাপাবিলিটি এবং দাম এর ক্ষেত্রেও কম পাওয়া যায়, বা সকল ধরনের মানুষের কাছেই সহজলভ্য ও আধুনিকায়ন।
মোবাইলের স্ক্রিন সাইজঃ
কোন ধরনের স্ক্রিন সাইজ এর মোবাইল কিনবেন সে ক্ষেত্রে ছোট স্ক্রিনের ফোন কেনার সুবিধা হচ্ছে এটাকে হাতের মুঠোয় রাখা যায়। খুব সহজেই ছোট স্ক্রিনের ফোন পকেটে খাপ খেয়ে যায়। মাঝারি স্ক্রিন সাইজ ফোনগুলোর মধ্যে দীর্ঘাস্থায়ী ব্যাটারির জন্য জনপ্রিয়। বড় স্ক্রিন বিশিষ্ট মোবাইল গুলো ভিডিও দেখা, বই পড়া এবং পাশাপাশি দুটো অ্যাপ চালানোর জন্য বড় স্ক্রিনের ফোন দরকার হয়।
মোবাইলের কোন ডিসপ্লে দেখে কিনবেনঃ
স্ক্রিনের সাইজই এর পাশাপাশি ডিসপ্লে কোয়ালিটিও দেখে কিনবেন, মোবাইল কেনার আগে ব্রাইটনেস, কালার কোয়ালিটি এবং দেখার অ্যাঙ্গেল যাচাই করে নিবেন। প্রথমেই নিশ্চিত হয়ে নিবেন যে আপনার ফোনের ব্রাইটনেস বাইরের উজ্জল আলোতে মোবাইলের ভিতরে কোন কিছু ভালোভাবে পড়ার জন্য যথেষ্ট কি না।
স্ক্রিন কতটা কালারফুল সেটাও দেখার বিষয়।
মোবাইল কোন রেজোলিউশন দেখে কিনবেনঃ
ফোন রেজোলিউশনের জন্য ফুল এইচডি (১৯২০ x ১০৮০ পিক্সেল) ভালো। বেশির ভাগ ফোনই আজকাল কোয়াড-এইচডি রেজোলিউশন (২৫৬০ x ১৪৪০ পিক্সেল ) সার্ভিস দিয়ে থাকে। আর এ-সব ফোন দিয়ে অনায়াসেই হাই-রেজুলেশনের ভিডিও ও তৈরি করা যায়।
কোন ডিজাইন কিনবেন, মোবাইল কেনার আগে আপনি যদি কোয়ালিটির কথা চিন্তা করেন তাহলে অবশ্যই মেটাল অথবা গ্লাস বডি ডিজাইন করা মোবাইল কিনবেন। যদি টাকা বাচাতে চান তাহলে প্লাস্টিক বডি ডিজাইনের মোবাইলও পাবেন।
মোবাইলের ক্যামেরা সম্পর্কেঃ
ক্যামেরা সম্পর্কে বলতে গেলে এখনকার দিনে মোবাইলের প্রসেসরের চেয়েও মোবাইলের ক্যামেরা মানুষের কাছে বেশি গুরত্বপূর্ণ। কারণ বেশির ভাগ লোকই মোবাইলকে নিজের ক্যামেরা হিসেবেই ব্যবহার করে। অনেক স্মার্টফোনই এখন ১২ মেগাপ্রিক্সেলেরর মতো ক্যামেরা দিয়ে থাকে। কিন্তু মোবাইল কেনার আগে কেবল মেগাপ্রিক্সেল দেখে নয়। বরং ছবির কোয়ালিটি, অ্যাপারচার, স্পিড এবং ফিচার দেখে মোবাইল কিনুন। সম্ভব হলে মোবাইল কেনার আগে ছবি তুলে দেখুন যে সেটটি কত দ্রুত ছবি ক্যাপচার করতে পারে। আর আপনি যদি প্রচুর ছবি তুলতে অভ্যস্ত হন তবে এমন সেট কিনুন যেটাতে মাইক্রো এসডি কার্ড স্লট থাকবে।
মোবাইলের কত জিবি Ram দেখে কিনবেনঃ
মোবাইলের র্যামের সম্পর্কে বলতে গেলে ১ জিবি সিস্টেম মেমোরি যুক্ত ফোনগুলো এড়িয়ে চলুন। ২-৩ GB স্ট্যান্ডার্ড ধরা যায়। কিন্তু এখন আপনি ৪জিবি ও পাবেন।
মোবাইল কেনার আগে প্রসেসর সম্পর্কে জেনে নিনঃ
প্রসেসর সম্পর্কে বলতে গেলে, মোবাইল কেনার আগে এটা মনে রাখবেন যে ফোনের প্রসেসর যদি ভালো হয় তবে অ্যাপ ওপেন হবে দ্রুত, গেম প্লে করা যাবে ভালোভাবে এবং ফটো এডিটিং হবে তাড়াতাড়ি।
মোবাইলের ইন্টারনাল স্টোরেজঃ
ইন্টারনাল স্টোরেজ বলতে গেলে, ইন্টারনাল স্টোরেজ যত বেশি হয় ততই ভালো। বেশির ভাগেই ৩২ জিবি করে থাকে। আপনি যদি প্রচুর ছবি তোলেন এবং ভিডিও দেখেন সেক্ষেত্রে ৬৪ জিবি আপনার জন্য ভালো এবং ১২৮ জিবি অনেক ভাল।
একটা মাইক্রো এসডি কার্ডও রাখতে পারেন। বেশির ভাগ অ্যানড্রয়েডই এই সুবিধা দিয়ে থাকে।
মোবাইলের ব্যাটারি লাইফ সম্পর্কে বলতে গেলেঃ
স্ক্রিন সাইজ, প্রসেসর এবং অপারেটিং সিস্টেমের ওপর ভিত্তি করে নির্ধারণ করা হয় যে ব্যাটারি কতক্ষণ সার্ভিস দিবে। একবার চার্জে ৯ ঘণ্টার সার্ভিস পাওয়া যাবে এমন ব্যাটারি দেখা ভালো। মোবাইল কেনার আগে দেখবেন ব্যাটারির ক্ষমতা যেন কিছুতেই ৩০০০ মিলি অ্যাম্পিয়ারেরর কম না হয়।
মোবাইল কেনার আগে ফিচার দেখে কিনবেনঃ
মোবাইলের অন্যান্য কি ফিচার কি কি আছে সেগুলোও দেখে মোবাইল কিনতে পারেন, যেমন
রিমোভাল ব্যাটারি
কিছু কিছু ফোন থেকে আপনি ডাবল ব্যাটারি সার্ভিস পাবেন। অর্থাৎ, একটা ব্যাটারিতে সমস্যা হলে আপনি সম্পূর্ণ ফ্রি আরেকটি ব্যাটারি ব্যবহার করতে পারবেন।
কিছু কিছু ফোন ১ মিটার গভীরতার পানিতে আধ ঘণ্টা ফেলে রাখলেও কোন ক্ষতি হবে না। স্থায়িত্বের কথা চিন্তা করলে আপনার ওয়াটার প্রুফ ফোনও কিনতে পারেন।
মোবাইল কেনার আগে আরো কিছু বিষয় লক্ষ্য রাখা উচিৎ। ছোট ছোট হলেও বিষয়গুলো গুরুত্বপূর্ণ, তাই মনোযোগ দেয়া উচিৎ এগুলোর প্রতিও।
ফিঙ্গারপ্রিন্ট সিকিউরিটি সার্ভিসযুক্ত মোবাইলগুলোও কিনতে পারেন। ফিঙ্গারপ্রিন্ট সিকিউরিটি আপনার স্মার্টফোনের সার্বোচ্চ নিরাপত্তা দিতে সক্ষম এবং আপনার যেকোন পেমেন্ট ভেরিফাই করার জন্যও যথেষ্ট। আপনি ভাল সুবিধা উপভোগ করবেন।
মোবাইলের ওয়্যারলেস চার্জিং যুক্ত ফোনও কিনতে পারেন, তারবিহীন চার্জিং পদ্ধতি এখন বেশ জনপ্রিয়। একটা তারছাড়া চার্জিং ম্যাটের ওপর ফোন রাখলেই সেটা চার্জ হবে। আপনি চাইলে এ ধরনের অপশনযুক্ত মোবাইলও কিনতে পারেন।
যেহেতু মোবাইল ফোন আমাদের সার্বক্ষণিক সঙ্গী এবং বলতে গেলে প্রতিটা ক্ষেত্রে এর প্রয়োজন অপরিহার্য। সুতরাং, নির্দিষ্ট বাজেটের মধ্যে সেরা ফোনটি নির্বাচনে দক্ষ হওয়া জরুরি। মোবাইল কেনার আগে বিষয়গুলো মাথায় রাখলেই একটা ভালো ফোন সহজেই নির্বাচন করা সম্ভব।
আশা করি লেখাটি ভাল লেগেছে যদি ভাল লেগে থাকে তাহলে লাইক কমেন্ট শেয়ার করতে পারেন। আল্লাহ হাফেজ।
আরো জানুন–
- ৫০ টি সবচেয়ে দরকারী ওয়েবসাইট, Top 50 most useful websites
- ৫টি ফ্রি ডাউনলোড ম্যানেজার সফটওয়ার, Free download manager
- ৫টি সেরা খুবই দরকারী ওয়েবসাইট যা প্রত্যেকের জানা উচিত
- ৫টি ফ্রি অনলাইন ভিডিও কনভার্টার ওয়েবসাইট
- ৫টি ফ্রি এন্টিভাইরাস, ভাইরাস স্ক্যানার ওয়েবসাইট টুলস
- ৫টি অনলাইন ছবির ব্যাকগ্রাউন্ড রিমুভ ওয়েবসাইট