জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন/ভোটার আইডি কার্ড সংশোধনের নিয়ম
এই পোষ্টে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করার নিয়ম বা ভোটার আইডি কার্ড সংশোধনের নিয়ম সম্পর্কে জানতে পারবেন। (NID Card Correction)
প্রথমেই বলে নেই বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র কে আমরা বাংলাদেশ ভোটার আইডি কার্ড বলেও ডাকি কারণ এটি যেমন আমাদের পরিচয়পত্র ঠিক তেমনি ভোট দেওয়ার জন্যও ব্যবহার হয়। তাই এই তথ্য সমৃদ্ধ কার্ডটিকে জাতীয় পরিচয়পত্র বা ভোটার আইডি কার্ড বলা হয়। আবার ইংরেজিতে Bangladesh NID Card অথবা Bangladeshi National Identity Card বলা হয়।
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করার অনলাইন নিয়ম বা অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার সকল পদ্ধতি সম্পর্কে এই পোষ্টে জানতে পারবেন। এই পোষ্টটি পড়লে নিজেই এনআইডি কার্ডের তথ্য সংশোধন করতে পারবেন।
NID Card এ কোন তথ্য ভুল থাকলে মানে নিজের নাম, জন্ম তারিখ, বাবা-মায়ের নাম ভুল থাকলে কিভাবে সংশোধন করতে হয় তা জানতে পারবেন। অনলাইনের মাধ্যমে সংশোধনের জন্য কিভাবে আবেদন করবেন বা কি কি করতে হয় তা নিয়ে আজকের পোষ্টটি সাজানো হয়েছে।
কি কি আলোচনা হবে সংক্ষেপে দেখুন-
- জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন মূল ধারণা
- জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করতে কি কি লাগে
- এনআইডি কার্ড সংশোধন করতে কত টাকা লাগে
- জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করার নিয়ম
- -১ম ধাপঃ ভোটার আইডির অ্যাকাউন্ট রেজিস্ট্রেশন
- -২য় ধাপঃ ভোটার আইডির তথ্য সংশোধন
- -৩য় ধাপঃ ভোটার আইডির ট্রানজেকশন/ফি প্রদান
- -৪র্থ ধাপঃ সার্ভারে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট আপলোড
- -৫ম ধাপঃ সংশোধিত এনআইডি কার্ড ডাউনলোড
- ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানা পরিবর্তন
- জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন সম্পর্কিত প্রশ্ন উত্তর
- -ভোটার আইডি কার্ড জন্ম তারিখ সংশোধন করা যায়?
- -জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন করতে কত দিন লাগে?
- -ভোটার আইডি কার্ড কতবার সংশোধন করা যায়?
- -এনআইডি কার্ডের নাম সংশোধন করতে কি কি লাগে?
- -বাবা মায়ের নামে ভুল থাকলে সংশোধন করতে কি লাগে?
- -মোবাইল নাম্বার পরিবর্তন করবো কি করে?
- -স্মার্ট কার্ড সংশোধন ফি কত?
- -আইডি কার্ডের বয়স বাড়াবেন কি করে?
- -স্মার্ট কার্ড কিভাবে সংশোধন করা যায়?
- -এনআইডি কার্ডে রক্তের গ্রুপ যুক্ত/পরিবর্তন করব কিভাবে?
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন মূল ধারণা
অনলাইনে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন এর জন্য মোবাইল অথবা কম্পিউটার থেকে ভিজিট করতে হবে services.nidw.gov.bd এই ওয়েবসাইটে। জাতীয় পরিচয় পত্র নাম্বার, জন্ম তারিখ ব্যবহার করে একাউন্ট রেজিস্টার করতে হবে। মোবাইল নাম্বার যাচাই ও নিজের মুখ বা ফেস ভেরিফিকেশন করে nid website ড্যাশবোর্ড থেকে এডিট প্রোফাইলে ক্লিক করে তারপর প্রয়োজনীয় তথ্য সংশোধন করতে হবে। সবশেষ সংশোধন ফি জমা দিয়ে অনলাইনে আবেদন জমা দিতে হবে।
ভোটার আইডি সংশোধনের আবেদনপত্র জমা দেয়ার আগে খেয়াল করতে হবে সংশোধনের জন্য প্রয়োজনীয় প্রমানপত্র আছে কিনা ও আপলোড করতে হবে। জাতীয় পরিচয়পত্রের যে তথ্য পরিবর্তন করতে চান তার সত্যতা যাচাই করার জন্য যেসকল কাগজপত্র দরকার তার সত্যায়িত কাগজপত্র আবেদনের সাথে জমা দিতে হবে।
NID Card সংশোধন এর আবেদনপত্র ঠিক থাকলে এবং বৈধ হলে সাধারণত ২৫ দিন থেকে ৩০ দিন এর মধ্যে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন আবেদন অনুমোদন দিয়ে দেয়। তবে নির্বাচন চলাকালীন সময় গুলোতে এই অনুমোদনের সময়সীমা পরিবর্তন হতে পারে।
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করতে কি কি লাগে
ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কি কি লাগে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও কি কি জমা দিতে হবে তা নির্ভর করবে ভোটার আইডি কার্ডে কি ধরনের তথ্য পরিবর্তন করা হবে তার উপর ভিত্তি করে।
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করতে প্রধানতঃ
- শিক্ষাগত যোগ্যতা সনদ
- অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ
- ড্রাইভিং লাইসেন্স
- ই পাসপোর্ট
এই ডকুমেন্ট গুলো জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের জন্য বেশি কার্যকর ভূমিকা পালন করে থাকে।
উপরে বর্নিত ডকুমেন্ট গুলো না থাকলে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে এফিডেভিট (হলফনামা), নাগরিক সনদ, অয়ারিশ সনদ আপলোড করতে হয়।
ভোটার আইডি কার্ডে স্বামী কিংবা স্ত্রীর নাম সংশোধন (পরিবর্তন) করতে কাবিননামার প্রয়োজন হয়ে থাকে।
জাতীয় পরিচয়পত্রে রক্তের গ্রুপ দেওয়া না থাকলে তা যুক্ত করতে অথবা পরিবর্তন করতে মেডিক্যাল ক্লিনিক হতে রক্তের গ্রুপ টেস্ট করে রিপোর্ট আপলোড করতে হবে। ঠিকানা সংশোধন করতে বিদ্যুৎ বিলের কাগজ বা ইউটিলিটি বিলের কাগজ জমা দিতে হবে।
👉👉আরো জানুন-ভোটার আইডি কার্ডের ছবি পরিবর্তন করার নিয়ম
এনআইডি কার্ড সংশোধন করতে কত টাকা লাগে
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করতে সর্বনিম্ন ২৩০টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৩৭৫টাকা ফি প্রদান করতে হতে পারে। আবেদনের ধরনের উপর সংশোধন ফি নির্ভর করবে।
ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন ৩টি প্রধান শ্রেণিতে বিভক্ত-
- ব্যক্তিগত তথ্য সংশোধন
- অন্যান্য তথ্য
- ঠিকানা পরিবর্তন
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন ফি কত টাকা লাগে তা নিম্নে দেখানো হলোঃ
সংশোধনের ধরণ | সংশোধন ফি |
ব্যক্তিগত তথ্য সংশোধন | ২৩০ টাকা |
অন্যান্য তথ্য সংশোধন | ১১৫ টাকা |
উভয় তথ্য সংশোধন | ৩৭৫ টাকা |
আইডি কার্ড রিইস্যু (Urgent) | ৩৭৫ টাকা |
আইডি কার্ড রিইস্যু (Regular) | ২৩০ টাকা |
NID Card সংশোধন ফি বিকাশ, রকেট ও নগদ মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবহার করে পরিশোধ করা যাবে। বিকাশে NID নাম্বার দিয়ে ভোটার আইডি সংশোধন ফি জমা দেয়া যায়।
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করার নিয়ম
আপনি যদি ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার নিয়ম জানতে চান তাহলে অনলাইনের মাধ্যমে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করার জন্য প্রথমে NID ওয়েবসাইটে গিয়ে আপনার NID Number, জন্ম তারিখ এবং একটি সিকিউরিটি ক্যাপচা পূরণ করে অ্যাকাউন্ট রেজিস্টার করতে হবে। তারপর মোবাইলের এপস দিয়ে ফেস ভেরিফিকেশন করে অ্যাকাউন্ট লগইন করতে হবে। আপনার প্রোফাইলের এডিট বাটনে ক্লিক করে প্রয়োজনীয় তথ্য পরিবর্তন করে আবেদন জমা দিতে হবে।
আরো সহজ ভাবে বুঝানোর জন্য বা সম্পূর্ণ কাজটি কিভাবে করবেন তা দেখানোর জন্য নিম্নে প্রতিটি ধাপ দেখানো হলোঃ
১ম ধাপঃ ভোটার আইডির অ্যাকাউন্ট রেজিস্ট্রেশন
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের জন্য প্রথমেই https://services.nidw.gov.bd/nid-pub/ ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন বা চলে আসুন। ভোটার আইডির নাম্বার, জন্ম তারিখ, ঠিকানা, মোবাইল নাম্বার দিয়ে ভেরিফিকেশন করে অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে।
ভোটার আইডি তথ্য প্রদান
এখন যে এনআইডি কার্ডের তথ্য পরিবর্তন করতে চান (NID Card information change) সে জাতীয় পরিচয়পত্রের নাম্বার, জন্ম তারিখ দিয়ে ফরম ফিলাপ করতে হবে। NID Card এর নাম্বার জানা না থাকলে ভোটার স্লিপের ফরম নাম্বার ব্যাবহার করতে পারবেন।
জাতীয় পরিচয় পত্রের ঠিকানা যাচাই
জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য সঠিক ভাবে পূরণ করা হলে, এখন আপনাকে জাতীয় পরিচয় পত্রের ঠিকানা যাচাই করতে হবে। জাতীয় পরিচয়পত্র কার্ডের আগের দেওয়া বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা যেমন দেয়া ছিলো ঠিক তেমনভাবে ঠিকানা দিতে হবে।
মোবাইল নাম্বার ভেরিফিকেশন
পূর্বে এনআইডি কার্ডে যে মোবাইল নাম্বার দেয়া ছিল সেই নাম্বারটির প্রথমের কিছু সংখ্যা এবং শেষের ৩টি সংখ্যা দেখানো হবে। এই মোবাইল নাম্বারটি বর্তমানে আপনার কাছে থাকলে আপনি কোড পাঠানোর জন্য “বার্তা পাঠান” বাটনে চাপুন। আর যদি মোবাইল নাম্বারটি না থাকে তাহলে নতুন একটি নাম্বার দিয়ে বার্তা পাঠান ফোনে।
এখন আপনার মোবাইলে ৬ সংখ্যার ভেরিফিকেশন কোড চলে আসলে সেটি যাচাইকরন কোডের ঘরে বসিয়ে “বহাল” চাপুন। নাম্বার ভেরিফিকেশন হয়ে গেলে আপনাকে এখন নিয়ে যাবে নিজের চেহারা বা ফেস ভেরিফিকেশন করার জন্য।
Face Verification পদ্ধতি
ভোটার আইডি অ্যাকাউন্ট রেজিস্ট্রেশন এর শেষ ধাপে NID Wallet App মোবাইলে ডাউনলোড করুন তারপর Face Verification প্রোফাইলে প্রবেশ করুন। ফেস ভেরিফিকেশন করতে ওয়েবসাইটে প্রদর্শিত QR Code স্ক্যান করুন এই এপসের মাধ্যমে।
NID wallet অ্যাপ দিয়ে চেহারা বা ফেস স্ক্যান শুরু হলে যার ভোটার আইডি সংশোধন করা হবে তার মুখমণ্ডল ডানে বামে নাড়িয়ে একাউন্ট রেজিস্ট্রেশনের পর্যায় শেষ করতে হবে। এই প্রক্রিয়াটি করা হয় এই কারণে যে, যেন ভোটার আইডি কার্ডের প্রকৃত গ্রাহকই কেবল একাউন্ট এক্সেস করতে পারে।
ফেস ভেরিফিকেশনের ধাপ শেষ হলে অ্যাকাউন্ট পাসওয়ার্ড সেট করতে বলা হবে। চাইলে পাসওয়ার্ড দিতে পারেন, আর না চাইলে এড়িয়ে যেতে পারেন। এখানের পাসওয়ার্ড দেওয়ার সুবিধা হল পরবর্তীতে অ্যাকাউনন্টে লগ-ইন করার সময় আবার ভেরিফিকেশন গুলো করার প্রয়োজন পরে না। জাতীয় পরিচয়পত্র নাম্বার এবং পাসওয়ার্ড দিয়েই লগইন করা যায়।
২য় ধাপঃ ভোটার আইডির তথ্য সংশোধন
১ম ধাপের আওতায় দেখানো নিয়ম অনুযায়ী অ্যাকাউন্ট রেজিস্ট্রেশন সফলভাবে করে থাকলে বর্তমানে এনআইডি কার্ডের ওয়েবসাইটে লগইন অবস্থায় রয়েছে। এবার হোম থেকে প্রোফাইল টেব এ চলে আসুন। জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন এর ৩টি প্রধান ক্যাটাগরি রয়েছে বা তিনটি ক্যাটাগরিতে বিভক্ত রয়েছে।
- ব্যক্তিগত তথ্য সংশোধন
- ঠিকানা পরিবর্তন/সংশোধন
- অন্যান্য তথ্য সংশোধন
এনআইডির ব্যক্তিগত তথ্য সংশোধন
ভোটার আইডির ব্যক্তিগত তথ্য সংশোধনের এই পেইজ থেকে নিজের নাম বাংলা ও ইংরেজিতে সংশোধন করা যাবে, তাছাড়াও জন্ম তারিখ, পিতা ও মাতার নামের ভুল সংশোধন করাতে পারবেন।
ব্যক্তিগত তথ্য সংশোধনের অধিনে যে সকল তথ্য পরিবর্তন করা যায় তা নিম্নে দেখানো হল-
- ব্যক্তির নিজের নাম (বাংলা)
- ব্যক্তির নিজের নাম (English)
- লিঙ্গ
- রক্তের গ্রুপ
- জন্ম নিবন্ধন নাম্বার
- জন্ম তারিখ পরিবর্তন
- জন্মস্থান
- পিতার নাম সংশোধন (বাংলা)
- পিতার ভোটার আইডি কার্ডের নাম্বার
- মায়ের নাম সংশোধন (বাংলা)
- মায়ের ভোটার আইডি কার্ডের নাম্বার
এবার আপনার তথ্য পরিবর্তন করতে চাইলে ব্যক্তিগত তথ্য টেব থেকে “এডিট” নামের বাটনে চাপতে হবে। আপনি যে তথ্য সংশোধন করতে চান তা সিলেক্ট করুন।
আপনি যে তথ্যটি সংশোধন করতে চান, তার বাম পাশের টিক অপশনে ক্লিক করুন। এভাবে আপনার ভুল তথ্যগুলো প্রমাণপত্রের সাথে মিল রেখে সঠিকভাবে টাইপ করুন বা লিখে দিন । তারপর, পরবর্তী বাটনে ক্লিক করুন। এখানে আপনার সংশোধন করা তথ্যের পূর্বরুপ ও সংশোধিত রুপ দেখতে পাবেন। সব ঠিক থাকলে আবারও পরবর্তী বাটনে ক্লিক করুন।
এনআইডির সংশোধনি তথ্য পুনঃযাচাই
আপনি যে সকল তথ্য পরিবর্তন করেছেন তার একটি সামারি দেখাবে। মানে এই ধাপের আওতায় জাতীয় পরিচয়পত্রে আগে কি ছিলো এবং আপনার দেওয়া সংশোধন তথ্যের একটি তালিকায় দেখাবে। এবার এটি চেক করে পরবর্তী বাটনে চাপুন।
৩য় ধাপঃ ভোটার আইডির ট্রানজেকশন/ফি প্রদান
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের জন্য সরকারি ফি দিতে হয়। সংশোধন ফি সংশোধনের ধরণ অনুসারে ভিন্ন ভিন্ন হয়। প্রথম উপরের দিকেই ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন ফি এর একটি তালিকা দেওয়া হয়েছে। তালিকা থেকে দেখে নিন আপনার পরিবর্তনের জন্য কত টাকা ফি দেওয়া লাগবে।
বর্তমানে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের জন্য ফি বিকাশ, রকেট ও নগদ একাউন্ট ব্যবহার করে পরিশোধ করা যাবে। আপনার কাছে যে মোবাইল ব্যাংকিং এর যে একাউন্টটি রয়েছে সেটি দিয়েই জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন ফি জমা দিয়ে দিতে পারবেন।
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন ফি জমা দেয়ার নিয়ম
ভোটার আইডি কার্ডের সংশোধন ফি জমা দেওয়ার জন্য বিকাশ রকেট এবং নগদের মাধ্যমে দিতে পারবেন। তবে এই পোষ্টে বিকাশ এর মাধ্যমে দেখানো হলো যেহেতু বিকাশ বেশি ব্যবহার করা হয়।
বিকাশে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন ফি পরিশোধ করার নিয়মঃ
বিকাশের মাধ্যমে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের ফি জমা দেওয়া জন্য প্রথমে বিকাশ অ্যাপ এ প্রবেশ যান। তারপর বিকাশের ড্যাশবোর্ড থেকে পে বিল অপশনে যান। তারপর সরকারি ফি থেকে NID Service সিলেক্ট করুন। আবেদনের ধরন এবং আইডি কার্ডের নাম্বার দিয়ে পেমেন্ট করুন।
অ্যাপের মধ্যে সংশোধনের ধরন বাছাই করলে বিকাশ অ্যাপ দেখিয়ে দেবে কত টাকা পেমেন্ট করতে হবে। আপনার বিকাশে চাহিদা অনুযায়ী টাকা থাকলে বিকাশের পিন দিয়ে পেমেন্ট করে দিন। এখানে পেমেন্ট দেয়া হয়ে গেলে NID ওয়েবসাইটে আপনার একাউন্টে টাকা জমা হয়ে যাবে।
৪র্থ ধাপঃ সার্ভারে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট আপলোড
আমাদের আইডি কার্ডের যে তথ্য পরিবর্তন করতে চাই তার প্রমান করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রমাণপত্র আপলোড করতে হবে। ব্যক্তিগত তথ্য সংশোধনের জন্য সবথেকে কার্যকরী ভূমিকা রাখে শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র, পাসপোর্ট অথবা ড্রাইভিং লাইসেন্স। এর সাথে অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ আপলোড করতে হয়।
বাবা-মায়ের নামের বানান পরিবর্তন করতে হলে পিতা-মাতার আইডি কার্ডের স্ক্যান কপি এবং ভাই বোনের আইডি কার্ডের স্ক্যান কপি আপলোড করতে হয়।
ঠিকানা পরিবর্তন করার জন্য আবেদন করতে চাইলে বিদ্যুৎ বিলের কাগজ অথবা যে কোন ইউটিলিটি বিলের কপি আপলোড করতে হবে।
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের আবেদনপত্র সাবমিট হয়ে গেলে সংশোধন ফরম ডাউনলোড করে রেখে দিতে পারেন। আবেদন অনুমোদন হয়ে গেলে স্থানীয় নির্বাচন কমিশন অফিস থেকে আপনার সংশোধিত আইডি কার্ড সংগ্রহ করতে এই আবেদন ফরমটি প্রয়োজন হতে পারে। তবে অনলাইনে জাতীয় পরিচয়পত্র ডাউনলোড করতে চাইলে সংশোধন ফরম দরকার হয় না।
৫ম ধাপঃ সংশোধিত এনআইডি কার্ড ডাউনলোড
আমাদের ভোটার আইডি কার্ডের সংশোধন আবেদন সফল ভাবে সাবমিট করা হলে এবং এর সাথে সকল প্রমাণপত্র আপলোড দেওয়ার সর্বোচ্চ ৪৫ দিনের মধ্যে আবেদন অনুমোদন হয়ে যায়। বেশিভাগ ৩ সপ্তাহের মধ্যেই সংশোধন আবেদন এপ্রোভ হয়ে থাকে।
আবেদনটি অনুমোদন হয়ে গেলে মোবাইলে মেসেজের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হয়। তারপর চাইলে অনলাইন থেকে ডাউনলোড করে লেমেনেটিং করে ব্যবহার করা যেতে পারে। তাছাড়াও সংশোধন করা ভোটার আইডি কার্ডটি উপজেলা নির্বাচন কমিশন অফিস থেকে সংগ্রহ করে নিতেও পারেন।
ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানা পরিবর্তন
অনলাইনে জাতীয় পরিচয়পত্রের প্রায় সকল তথ্যই পরিবর্তন/সংশোধন করার অপশন থাকলেও ভোটার এলাকা পরিবর্তন করার অপশন অনলাইনে রাখা হয়নি, এটি অফলাইন ভিত্তিক রয়েছে। মানে ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানা পরিবর্তন করার জন্য অনলাইনে আবেদন করা যায় না। ঠিকানা পরিবর্তন করার জন্য ভোটার এলাকা স্থানান্তর ফরম পূরণ করে নির্বাচন অফিসে জমা দেওয়ার দরকার হয়। ঠিকানা পরিবর্তন ফরম কে ১৩ নং ফরম বলা হয়ে থাকে।
ভোটার এলাকা পরিবর্তনের যথার্থ কারণ ও প্রমাণ থাকলে সহজেই জাতীয় পরিচয়পত্রের ঠিকানা পরিবর্তন করা যায়। আগের ঠিকানায় কত সময় ধরে বসবাস করছেন, বর্তমানে যে এলাকায় ভোটার হস্থান্তর করছেন তার কারণ উল্লেখ করতে হয় আবেদন ফরমে।
👉ভোটার এলাকা পরিবর্তন ফরম pdf = Download Migration Form-13
Migration Form পূরণ করে, সাথে সাথে ভোটার এলাকা পরির্বতনের কারণ প্রমাণ সরূপ নিয়ে স্থানীয় নির্বাচন অফিসে যেতে হবে। চাকরি বদলির কারণে ভোটার এলাকা পরিবর্তন করতে চাইলে Job Posting Latter আবেদন ফরমের সাথে জমা দিতে হয়। বাসস্থান পরিবর্তনের কারণে ঠিকানা পরিবর্তন করতে চাইলে, বর্তমান ঠিকানার বিদ্যুৎ বিলের কাগজ অথবা যে কোন ইউটিলিটি বিলের কপি সাথে জমা দিতে হয়।
👉👉আরো জানুন-ভোটার এলাকা পরিবর্তন করার নিয়ম
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন সম্পর্কিত প্রশ্ন উত্তর
জাতীয় পরিচয়পত্র বা ভোটার আইডি কার্ডের সংশোধন সম্পর্কে নিম্নে পয়েন্ট আকারে প্রশ্ন উত্তর দেওয়া হলো। এখান থেকে আপনার মনের ভিতরে যেসকল প্রশ্ন রয়েছে তার উত্তর পেয়ে যাবেন আশা করছি।
ভোটার আইডি কার্ড জন্ম তারিখ সংশোধন করা যায়?
ভোটার আইডি কার্ডের মধ্যে জন্ম তারিখ ভুল থাকলে উপরে দেখানো মতে ওয়েবসাইটে গিয়ে জন্ম তারিখ সংশোধন করে নিতে পারবেন।
জন্ম তারিখ সংশোধন করতে বেশি কার্যকরি ডকুমেন্ট হলো শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ সমূহ। যদি কোন সার্টিফিকেট না থাকে তাহলে পাসপোর্ট বা ড্রাইভিং লাইসেন্সের কপি দিয়ে করা যাবে।
জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন করতে কত দিন লাগে?
ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে সর্বোচ্চ ৬০ দিন সময় লাগতে পারে। তবে বেশিরভাগই এটি নির্ভর করবে আপনার সংশোধনের ধরণ অনুযায়ী হিসেবে। উপযুক্ত প্রমাণপত্র থাকলে অনলাইনে আবেদন করার পর ১৪ থেকে ২১ দিনের মধ্যেই কাজ হয়ে যেতে পারে। নির্বাচন চলাকালীন সময় একটু বেশি সময় লাগতে পারে।
ভোটার আইডি কার্ড কতবার সংশোধন করা যায়?
nid card সংশোধন কতবার করা যাবে সেটা এখনো নির্ধারণ করা হয়নি। তবে এক তথ্য একবার পরিবর্তন করতে পারবেন। ১ম বার তথ্য সংশোধনের জন্য ২৩০ টাকা, ২য় বার (একবার যা সংশোধন হয়েছে তা ছাড়া) ৩৪৫টাকা এর পর প্রতিবার ৪৬০টাকা ফি দিতে হবে।
এনআইডি কার্ডের নাম সংশোধন করতে কি কি লাগে?
এনআইডি কার্ডের নাম সংশোধন করতে সবথেকে গ্রহণযোগ্য ডকুমেন্ট হলো যে কোন বোর্ড পরীক্ষার সার্টিফিকেট। তাছাড়াও ড্রাইভিং লাইসেন্স অথবা পাসপোর্ট এবং স্বামী-স্ত্রীর নামের ক্ষেত্রে বিয়ের কাবিন নামা দিয়ে আবেদন করতে হয়।
বাবা মায়ের নামে ভুল থাকলে সংশোধন করতে কি লাগে?
পিতা মাতার নামে ভুল থাকলে উপরে দেখানো মতে সংশোধন করে নিতে পারবেন। ডকুমেন্ট হিসেবে বাবা-মায়ের জাতীয় পরিচয়পত্রের স্ক্যান কপি, ভাই বোনের আইডি কার্ডের স্ক্যান কপি এবং কোন বোর্ড পরিক্ষার সনদ/ড্রাইভিং লাইসেন্স/ পাসপোর্ট স্ক্যান করে আপলোড করতে হবে।
মোবাইল নাম্বার পরিবর্তন করবো কি করে?
ভোটার আইডি কার্ডে মোবাইল নাম্বার পরিবর্তন করার জন্য NID Website এ গিয়ে রেজিস্ট্রেশন করার সময় ফোন নাম্বার ভেরিফিকেশন করতে OTP পাঠানো হয়। সে ধাপে মোবাইল নাম্বার পরিবর্তন করুন বাটনে চেপে আপনার নতুন মোবাইল নাম্বার দিলেই মোবাইল পরিবর্তন হয়ে যাবে।
স্মার্ট কার্ড সংশোধন ফি কত?
ভোটার আইডি কার্ড এর স্মার্ট কার্ড সংশোধন করতে সর্বনিম্ন ২৩০টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৩৪৫টাকা ফি প্রদান করতে হয়ে থাকে। আবেদনের ক্যাটাগরি ও সংশোধন ধরণের উপর নির্ভর করে ফি নির্ধারণ হবে।
আইডি কার্ডের বয়স বাড়াবেন কি করে?
আমাদের নিজের মনের মত করে জাতীয় পরিচয় পত্রে বয়স বাড়ানো বা কমানো যায় না। বয়স বাড়ানো বা কমানোর জন্য যথেষ্ট প্রমাণ দরকার হয়। সাধারণত শিক্ষাগত যোগ্যতা সনদ, জন্ম নিবন্ধন, পাসপোর্ট বা ড্রাইভিং লাইসেন্সের কপি দিয়ে করা যাবে।
স্মার্ট কার্ড কিভাবে সংশোধন করা যায়?
স্মার্ট কার্ড সংশোধন করার জন্য প্রথমে services.nidw.gov.bd ওয়েবসাইটে আপনার স্মার্ট কার্ড নম্বর ও জন্ম তারিখ দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করুন। ফেইস ভেরিফিকেশন করে লগইন করুন। এবার প্রোফাইল অপশনে যান এবং এডিট লিংকে ক্লিক করে তথ্য সংশোধন করুন। সংশোধন ফি পরিশোধ ও প্রয়োজনীয় প্রমাণপত্র আপলোড করে আবেদন জমা দিন। আবেদন অনুমোদন হলে তথ্য সংশোধন হবে।
এনআইডি কার্ডে রক্তের গ্রুপ যুক্ত/পরিবর্তন করব কিভাবে?
জাতীয় পরিচয়পত্রের মধ্যে (এনআইডি কার্ডে) রক্তের গ্রুপ থাকা জরুরি। যে কোন জরুরি মুহূর্তে এই আইডি কার্ড দেখেই রক্তের গ্রুপ সম্পর্কে জানা যাবে। আইডি কার্ডে রক্তের গ্রুপ যুক্ত বা পরিবর্তন করতে স্বাস্থ্য ক্লিনিক থেকে ব্লাড গ্রুপ টেস্ট রিপোর্ট (Blood group Test Report) আবেদনের সাথে জমা দিতে হয়।
👉👉আরো জানুন-নিজ এলাকার ভোটার তালিকা দেখার উপায় সমূহ
চাইলে নিচের ভিডিওটি দেখেও জেনে নিতে পারেন ভোটার আইডি কার্ড সংশোধনের নিয়ম-
আরো জানুন-
ভোটার আইডি সংশোধন নিয়ে অনেক সুন্দর তথ্য প্রদান করেছেন ভাইয়া, ধন্যবাদ।
কমেন্ট করে উৎসাহ দেওয়ার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ।
Thank You So Much.