কম্পিউটারের কিছু ভুল ধারণা যা আমরা মনে করে থাকি
কম্পিউটারের কিছু ভুল ধারণা যা আমরা মনে করে থাকি সে বিষয় নিয়ে আজকের আর্টিকেলটি সাজানো হয়েছে।
তথ্য প্রযুক্তির এই যুগে আমাদের খুবই প্রয়োজন যে প্রযুক্তিটি তা হলো কম্পিউটার। আমরা এই কম্পিউটার এর অনেক কিছুই বুঝে না বুঝে চালিয়ে থাকি। এই কম্পিউটার চালাতে গিয়ে আমাদের মধ্যে কিছু ভুল ধারণা সৃষ্টি হয় বা ভুল ধারণা নিয়ে চলে থাকি। আমাদের এই ভুল ধারণা থেকে কম্পিউটারের অনেক কর্ম করে থাকি যা হয়তো অনেকের কাছে অজানা। তো আজ এই কিছু ভুল ধারণা গুলো কি কি এ গুলো নিয়েই আলোচনা করব।
কম্পিউটারের কিছু ভুল ধারণা –
উইন্ডোস সিস্টেম নিরাপদ নয়
আমাদের মধ্যে অনেকেরই ধারণা আছে উইন্ডোস নিরাপদ নয়, কারণ হ্যাকাররা বা ভাইরাস মেকাররা উইন্ডোসকে টার্গেট করে ভাইরাস তৈরি করে থাকে বা আটাক করে থাকে। তাদের ধারনা মতে বিশ্বে বেশির ভাগ ব্যবহারকারীই হলো উইন্ডোস তাই আটাকাররা উইন্ডোসকে টার্গের করে তাদের ভাইরাস তৈরি করে থাকে। তবে কথাটি একেবারে মিথ্যাও জানে না, ভাইরাস মেকাররা উন্ডোসকে টার্গের করেই বেশি করে থাকে। তবে এটা চিন্তা করাও ঠিক নয় যে উইন্ডোস নিরাপদ নয় বরং উইন্ডোস চালিয়েও নিরাপদ থাকা যায়। যেমন প্রতিনিয়ত উইন্ডোস আপডেট রাখা ও ডাটাগুলোকে ব্যাকআপ রাখা। আমাদের বেশির ভাগই অসাবধানতার কারনেই হ্যাক হয়ে থাকে যার কারনে উইন্ডোসকে দায়ি করে লাভ নেই।
কম্পিউটার রিস্টার্ট দেওয়া
আমরা যখনই কোন নতুন সফটওয়ার ইন্সটল করতে যাই ইন্সটল করার পর কম্পিউটার রিস্টার্ট দিতে বলে আমরা তখন রিস্টার্ট করে ফেলি কিন্তু বাস্তবে এই রিস্টার্ট দেওয়ার কোন প্রয়োজন পরে না। রিস্টার্ট না দিয়েও আপনি অনায়াসে পিসি চালাতে পারবেন কোন সমস্যা হবে না। তবে কিছু কিছু সফটওয়্যার আছে যেগুলোতে রিস্টার্ট দেওয়ার প্রয়োজন হয় তার কারন হলো এই সফটওয়্যার এর মধ্যে ফাইল আছে যা রিস্টার্ট দেওয়ার পরই সিস্টেম থেকে রান হয়ে থাকে এটা শুধু মাত্র সব মিলিয়ে ৫% এর মত সফটওয়ার এর ক্ষেত্রেই দরকার হয়।
পেনড্রাইভ সেফলি ইজেক্ট
আমরা যখন পেনড্রাইভ পোর্টেবল হার্ডড্রাইভ কম্পিউটারের ইউএসবি পোর্টের সাহায্যে ইন করে থাকি তখন বের করবার সময় সেফলি ইজেক্ট রিমুভাল ডিস্ক এটাতে ক্লিক করে পেনড্রাইভ বা ড্রাইভকে রিমুভ করতে হয় জেনে থাকি কারন সেফলি ইজেক্ট রিমুভাল না করে বের করলে ভাইরাস ধরতে পারে বা ড্রাইভ নষ্ট হতে পারে জেনে থাকি। কিন্তু বাস্তবে এটার কোন প্রয়োজন হয় না, আপনি নরমালি যেভাবে ইউএসবি পোর্টে পেনড্রাইভ বা অন্যকিছু প্রবেশ করিয়েছেন ঠিক তেমনিভাবে বেরও করা যায় কোন কিছু রিমুভ করে বের করতে হয় না।
ড্রাইভার ডিস্ক জমিয়ে রাখা
আমরা যখনই নতুন কোন পিসি কিনি তখন এটার সাথে ড্রাইভার ডিস্ক দিয়ে দেয় মানে সিডি দিয়ে দেয়। সিডির মাধ্যমে কম্পিউটারের ড্রাইভার দিতে হয় কিন্তু এই সিডিটি সংরক্ষন করে রাখার কোন প্রয়োজন পরে না। কারন আপনি যখন ড্রাইভারটি দিচ্ছেন পরে এই সিডির মাধ্যমে ড্রাইভার দেওয়ার কোন প্রয়োজন নেই কারন ড্রাইভার সব সময় আপডেট হয়, আপনার সবচেয়ে ভাল হয় ওই গ্যাজেট এর কোম্পানীর ওয়েবসাইটে গিয়ে ওইখান থেকে ড্রাইভারটি নামিয়ে নেওয়া, তখন আপনি আপডেট ড্রাইভারটি পেয়ে যাবেন।
পিসিতে এন্টিভাইরাস নিয়ে নিশ্চয়তা
আমরা যখনই আমাদের কম্পিউটারে কোন এন্টিভাইরাস দিয়ে দেই তখন মনে করি আমাদের কাজ শেষ আমাদের পিসিতে আর কোন সময় ভাইরাস এটাক করবে না। মুলত ধারণাটিও ভুল কারণ এন্টিভাইরাস যে সব সময় সিপিকে সুরক্ষিত রাখতে পারবে তা ঠিক নয়। কারণ এন্টিভাইরাসের সাথে সাথে ভাইরাসও দিন দিন আপডেট করে চলেছে যখন ভাইরাস আপডেট হয় তখন এন্টিভাইরাসের ডাটা বেজে এই ভাইরাসের তথ্য থাকে না। যার কারনে এন্টিভাইরাস অনেক সময় সঠিক ভাবে কর্মক্ষম হয় না। তাই এন্টিভাইরাস দেওয়ার পর আমাদের সাবধান থাকতে হবে।
দ্রুত গতির ইন্টারনেট ওয়েবসাইট
আমাদের মধ্যে একটা ধারণা আছে যত বেশি স্পিডের ইন্টারনেট নেওয়া যাবে ততবেশি তাড়াতাড়ি যেকোন ওয়েবসাইটে প্রবেশ করা যাবে বা ডাউনলোড করা যাবে। কিন্তু বাস্তবে আপনার যদি ১০-২০ এমবিপিএস এর কানেকশন থাকে আপনি এটা দিয়ে যেভাবে ফাস্ট স্পিডে ওয়েবসাইট ঘুরতে পারবেন বা ডাউনলোড করতে পারবেন ঠিক এই স্পিডেই ৫০ এমবিপিএস এর কানেকশনেও এই স্পিডই পাবেন। কারণ আপনার ইন্টারনেট ফাস্ট হলে কি হবে যে ওয়েবসাইটে যাবেন তাদের সার্ভারতো আপনার মত স্পিড থাকবে না। বেশিরভাগ ওয়েবসাইট এত ভাল সার্ভার ব্যবহার করে না তারা ইচ্ছে করেই ১০ এমবিপিএস এর স্পিড এর ব্যান্ডউইথ দিয়ে রাখে যাতে করে একসাথে অনেকজনকে সার্ভিস দিতে পারে। হাইস্পিড সার্ভার ব্যবহার করার জন্য অনেক ব্যয়বহুল হয়ে থাকে যা বেশিরভাগ মানুষ করে না। তবে আপনি যদি ইউটিউব গুগলের সাইটগুলোতে যান বা সেখান থেকে কোন কিছু ডাউনলোড করতে চান তাহলে সেখানে হাইস্পিডেই ব্যবহার করতে পারবেন। তবে ৫০ এমবিপিএস কানেকশনও নিতে পারেন যদি একটি কানেকশন দিয়ে অনেক মানুষ ব্যবহার করে তাহলে দরকার লাগতে পারে।
বেশি র্যাম মানে ফাস্ট পিসি
আমরা মনে করে থাকি বেশি র্যাম মানে কম্পিউটার ফাস্ট করবে তবে কথাটি অনেকটা সঠিক কিন্তু এটা আপনার কাজ অনুসারে হয়ে থাকে। আপনি যদি নরমাল কাজ করে থাকেন তাহলে আপনার ৮ জিবি র্যাম হলেই চলবে কিন্তু আপনি যদি ভিডিও ইডিটিং বা ফটোশপের মত ভারী কাজ করেন তাহলে আপনার বেশি র্যাম কাজে দিবে বেশি র্যাম হলেই পিসি ফাস্ট হবে না যদি আপনার কাজের ক্ষেত্রে দরকার না পরে। আপনি যদি এমএস ওয়ার্ড এক্সেল ব্যবহার করেন সেক্ষেত্রে আপনার বেশি র্যাম কোন প্রয়োজন হবে না এই সফটওয়ারটি রান হতে যে র্যাম দরকার তার চেয়ে বেশি র্যাম কোন প্রয়োজনে আসবে না।
কম্পিউটার রিফ্রেস দেওয়া
আমাদের মধ্যে দেখা যায় আমরা কোন কিছু হলেই মাউসের রাইট বাটন ব্যবহার করে রিফ্রেস দিতে থাকি। এই রিফ্রেস আমাদের পিসির কোন কাজে আসে না। বরং অনেকক্ষেত্রে পিসি স্লো হয়ে যাওয়ার আসংখা থাকে। যেমন আপনি একটি ড্রাইভে গিয়ে রিফ্রেস দিলেন আর এখানে অনেক ভিডিও গান আছে সেখানে দেখবেন আবার নতুনভাবে সেগুলো নরে উঠছে তার মানে হলো এগেুলোকে নতুন ভাবে মোমোরি ক্যাচ করছে সেখানে কিছুটা মেমোরির উপর চাপই পরছে তাই ফাস্ট হওয়ার পরিবর্তে স্লো হওয়ার আশংখা থাকে।
আশা করি কম্পিউটারের কিছু ভুল ধারণা সম্পর্কে জানতে পারলেন যা আপনার কম্পিউটার চালনায় আরো দক্ষতা এনে দেবে।
আরো পড়ুন-
জানারমত পোষ্ট