বাংলা ব্লগ

ভোটার আইডি কার্ডের ছবি পরিবর্তন করার নিয়ম, NID Photo Change

এই পোষ্টের মাধ্যমে ভোটার আইডি কার্ডের ছবি পরিবর্তন করার নিয়ম (NID Photo Change) সম্পর্কে ভালভাবে জানুন। (change photo of voter id card)

আমাদের মধ্যে অনেকেই নিজেদের ভোটার আইডি কার্ডের ছবি নিয়ে অনেক মনক্ষুন্ন ও সন্তুষ্ট নয়। যারা ২০০৭ থেকে ২০০৯ সালের দিকে ভোটার হয়েছেন তিনিদের ভোটার আইডি কার্ডের ছবি এতটাই খারাপ হয়েছে যে তা বলার ভাষা রাখে না। তবে ভোটার আইডি কার্ডের ছবি যতই অসুন্দর হওক না কেন, তাতে কিন্তু কোন কাজ আটকে থাকে না।

তবে এই ছবি দেখার পর নিজের ভিতরে খারাপ লাগে। ছবি দেখলে মনে হয় যেন নেশা করতে করতে দিন দুনিয়া একেবারে ভুলে গেছে। নিজের মন মাইন্ড খারাপ হয়ে যায়। মানুষের মন খারাপ লাগলে যেকোন কাজেও ভাল লাগে না। আর ভোটার আইডি যে কাজ গুলোতে প্রয়োজন হয় তা অনেক সময় নিজের পারসোনালিটি নষ্ট করে ফেলে এই ছবির জন্য। কেউ যদি ব্যবসা করে থাকে তাহলে তাকে ব্যবসায়ীক ডকুমেন্টের সাথে ভোটার আইডি দিতে হয়, বাহিরের দেখে যাওয়ার জন্য এই এনআইডি দরকার হয়, দেশের ভিতরে অনেক কোজে যেমন-ব্যাংকে, গাড়ী-বাড়ী করতে, চাকুরীতে, সিম উঠাতে এ রকম অনেক অনেক প্রয়োজনীয় কাজে এই ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি দিতে হয়, সেখানে ভোটার আইডি কার্ডের ছবি দেখলে এসকল কাজে ব্যবহার করতে গিয়ে মনের ভিতরে একটা লজ্জার সৃষ্টি হয়।

তবে Nid ছবি পরিবর্তন করার নিয়ম কিন্তু অনেক সহজই কিন্তু আমাদের মধ্যে একটা অনুভুতি আছে তা হলো এটি একটি ঝামেলার কাজ তাই ভোটার আইডি কার্ডের ছবিটি পরিবর্তন করা হয় না।

জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের আবেদন করে ভোটার আইডি কার্ড ছবি পরিবর্তন করার নিয়ম এবং Nid ছবি পরিবর্তন করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত নিম্নে জানুন।

যে সব কারনে ভোটার আইডি কার্ডের ছবি সুন্দর হয়নিঃ

আমরা যারা ২০০৭ সাল থেকে ২০০৯ সালের দিকে ভোটার হয়ে ছিলাম আমাদের ভোটার আইডি কার্ডের ছবি সুন্দর না হওয়ার পেছনে অনেক গুলো কারন ছিল।

প্রথম কারণ হলো- একদম লো কোয়ালিটির ওয়েবক্যাম দিয়ে ছবি তুলা যদিও ওয়েবক্যাম ছবি তুলার জন্য ব্যবহার করা হয় না কিন্তু এই ওয়েবক্যাম দিয়েই ছবি তুলা হয়েছে।

দ্বিতীয় কারণ হলো- ছবি তুলার জায়গাটি পর্যাপ্ত লাইটিং থাকতে হয় মানে আলো থাকতে হয় কিন্তু লাইটিং এর কোন ব্যবস্থা রাখা হয়নি।

তৃতীয় কারণ হলো- ছবি তুলার জন্য অদক্ষতা, ওই সময় যারা কাজ করেছিল তারা কম্পিউটারের কাজ কিছুটা জানতো কিন্তু ছবির এডিটিং করতে জানতো না বা ছবির কোন ধরনের এডিট করাই হয়নি- যেমন- কোন ছবি লাইটিং কম হলে বা কালো আসলে কিছুটা লাইটিং করে দেওয়া আবার ছবি তুলার জন্য এতটা দক্ষতাও ছিলনা। অনেকেই মনে করতে পারে ছবি ‍তুলা কোন কাজই নয় কিন্তু এটা ঠিক নয়, ছবি তুলাটাও একটা শিখার বিষয় আছে, না হলে সবাই ফটোগ্রাফার হতে পারত, একজন প্রফেসনাল ফটোগ্রাফার যেভাবে ছবি তুলতে পারে সেভাবে আমি আপনি পারব না।

চতুর্থ কারণ হলো- গণহারে খুবই তাড়াহুড়া করে তখন ভোটার করা হয়েছিল, তখন রৌদ্রে দাড়িয়ে সিরিয়াল ধরে ক্লান্ত হয়ে ছবি তুলার জায়গায় যায়, তাই ঘেমে ক্লান্ত হওয়ার কারনে ছবি ভালো আসেনি। তাছাড়াও তখন জনগণ এতটা অবগত ছিল না ছবি তুলার সময় কি কাপড় চোপড় পরতে হয়, অনেকেই টি-শার্ট পরে চলে আসে বা ভালো কাপড় না পড়েই চলে আসে। আবার অনেকেই প্রথম ভোটার হবে নার্ভাস ফিল করে তাই চেহারাতেও সেই অনুভুতিটা এসে পরে। যার কারনে ছবি অসুন্দর হয়।     

যেসব কারণে ভোটার আইডি কার্ডের ছবি পরিবর্তন করার দরকার হয়ঃ

আমাদের যাদের ভোটার আইডি কার্ডের ছবি সুন্দর হয়নি বা অসুন্দর হয়েছে তাদের জন্য তো এমনিতেই ছবিটি পরিবর্তন করা দরকার। তাছাড়াও আমরা যারা ২০০৭-২০০৮ সালের দিকে ভোটার হয়েছিলাম তখন আমাদের চেহারা আর এখনের চেহারা অনেকটাই পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে তাই আমাদের ছবি পরিবর্তন করার দরকার। এর মধ্যে- কারো স্বাস্থ্য হয়েছে, বয়স হয়েছে, কেউ কেউ দাড়ি রেখেছে ইত্যাদি কারণ গুলোর কারণেও ছবি পরির্বতন করা দরকার।

ভোটার আইডি কার্ডের ছবি পরিবর্তন করার নিয়ম বা পদ্ধতিঃ

অনলাইনের মাধ্যমেও ভোটার আইডি কার্ডের ছবি পরিবর্তনের জন্য আবেদনপত্র নেওয়া যাবে বা ভোটার আইডি কার্ডের ছবি পরিবর্তন করার জন্য সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে ২নং সংশোধনী ফরম নিয়ে পূরণ করার মাধ্যমে আবেদনপত্র দাখিল করা যায়। আবেদন দাখিল করার পূর্বে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন ফি হিসাব করে বিকাশ/রকেট এর মাধ্যমে পরিশোধ করতে হবে। সংশোধনী ফরমের উপর ফি পরিশোধের ট্রান্সজেকশন নম্বরটি লিখে দেওয়া যেতে পারে অথবা প্রদত্ত ফি জমার রশিদ আবেদনের সাথে জমা দিয়ে দিতে পারেন।

ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন ফরম পূরণ করার নিয়ম সমূহঃ

জাতীয় পরিচয়পত্রের ছবি পরিবর্তন সংশোধনী ফরম-২ এর ফরমটি যেভাবে পূরণ করবেন-

০১ নং ক্রমিক ক) বাংলায় আবেদনকারীর নাম লিখতে হবে। ১ নং ক্রমিকের খ)  আবেদনকারীর NID কার্ডের নম্বর/ভোটার ID কার্ডের নম্বর লিখতে হবে।

০২ নং ক্রমিক কিছু লেখা লাগবে না।

০৩ নং ক্রমিক ঝ) রো এর ৩য় কলাম চাহিত সংশোধিত তথ্য এর এখানে ছবি পরিবর্তন লিখে দিতে হবে।সর্বশেষ আবেদনকারীর স্বাক্ষর, পূর্ণ নাম, ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর লিখতে হবে।

জাতীয় পরিচয়পত্রের ছবি পরিবর্তনের নিয়ম অনুযায়ী যে যে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র লাগবেঃ

  • * এনআইডি কার্ড / ভোটার আইডি কার্ডের কপি।
  • * জন্ম নিবন্ধন সনদ কপি।
  • * শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ।
  • * ছবি পরিতর্বনের প্রত্যয়নপত্র।

-আবেদন কপির সাথে এনআইডি কার্ড বা ভোটার আইডি কার্ড এর কপি জমা দিতে হবে।

-জন্ম নিবন্ধন সনদ কপি জমা দিতে হবে তবে বাধ্যতামূলক নয় জমা না দিলেও সমস্যা নেই।

-শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ কপি জমা দিতে পারে তবে বাধ্যতামূলক নয়।

-পৌর মেয়র/ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান/ওয়ার্ড কাউন্সিলরের নিকট থেকে ভোটার আইডি কার্ডের ছবি পরির্তনের প্রত্যয়ন পত্র লিখে নিতে হবে এবং আবেদনের সাথে জমা দিতে হবে।

অন্যান্য প্রয়োজনীয় বিষয়ঃ

যে দিন ভোটার আইডি কার্ডের ছবি পরিবর্তনের জন্য আবেদন করবেন তখন আবেদনকারীরকে স্ব-শরীরে উপজেলা নির্বাচন অফিসার এর সামনে উপস্থিত থাকতে হবে। তিনি আবেদনকারীকে সনাক্ত করে আবেদন অনুমোদন দেবেন এবং অফিসের অন্য স্টাফগণ আপনার নতুন ছবি তুলে রাখবেন।

আবেদন জমা দেওয়ার পর ১ থেকে ২ সপ্তাহের মধ্যে ভোটার আইডি কার্ডের ছবি পরিবর্তন হয়ে যাবে বা আরো কিছু দিন দেরিও হতে পারে। আপনাকে নিজে অফিসে গিয়ে খোজ নিতে হবে আপনার কার্যক্রম শেষ হয়েছে কিনা।

শেষ কথাঃ

আশা করি যারা ভোটার আইডি কার্ডের ছবি পরিবর্তন করতে চান কিভাবে ভোটার আইডি কার্ডের ছবি পরিবর্তন করতে হয় জানতে পারলেন।

ধন্যবাদ লেখাটি পড়ার জন্য। আল্লাহ হাফেজ।

আরো পড়ুন-

Quick Bangla

বাংলা তথ্যভিত্তিক ওয়েবসাইট হিসেবে পরিচালিত এই সাইটটি। তাই বাংলায় অনেক ধরনের তথ্যই এখানে পেয়ে যাবেন। আশা করি সঠিক তথ্য বিষয়বস্তু জানতে পারবেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
Close

Adblock Detected

Please Turn off ad blocker