ডকুমেন্ট ফরমেট

ব্যবসায়ের শেয়ার বিক্রয় দলিল করার নিয়ম

আমরা যখন কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করি তখন যদি একের অধিক কয়েকজন মিলে ব্যবসায়ের মালিক থাকি সেক্ষেত্রে যদি কোন এক মালিক তার ব্যবসার অংশটুকু অন্যকারো কাছে বিক্রি করতে চাই তখন কিভাবে এই ব্যবসায়ের শেয়ার বিক্রয় দলিল করবে সেটাই পোষ্টে দেখানোর হয়েছে। এই চুক্তিনামাটি ব্যবসা হস্তান্তর দলিল বা মালিকানা হস্তান্তর দলিল নমুনা অথবা ব্যবসার মালিকানা পরিবর্তন হিসেবেও ধরে নিতে পারেন। তবে এই লেখাটি পড়লে কিভাবে ব্যবসায়ের শেয়ার বিক্রয় দলিলটি করতে হয় তা জানতে পারবেন এবং কি কি বিষয়গুলো দলিলে লিখতে হয় তা জানতে পারবেন।

ব্যবসায়ের শেয়ার বিক্রয় দলিল টি লিখতে গেলে প্রথমে মাইক্রোসফট ওয়ার্ডে দলিলটি লিখতে হবে যা নিম্নে একটি ফরমেট দেওয়া হলো, যেটা দেখে আপনার তথ্য মতে লিখতে হবে। তারপর লেখা শেষে পেইজ সেটাপ করে ৩০০টাকার ষ্ট্যাম্পে প্রিন্ট করতে হবে এবং সহি স্বাক্ষর করলেই হয়ে যাবে।

নিচে শেয়ার বিক্রয় দলিল এর নমুনা ফরমেট তুলে ধরা হলোঃ-

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

শেয়ার বিক্রয় দলিল

নাম:………….., পিতা:…………………ঠিকানা:………………. জাতীয়তা- বাংলাদেশী, ধর্ম- ইসলাম, পেশা- ব্যবসা।

-প্রথম পক্ষ / বিক্রেতা।

নাম:………….., পিতা:…………………ঠিকানা:………………. জাতীয়তা- বাংলাদেশী, ধর্ম- ইসলাম, পেশা- ব্যবসা।

-দ্বিতীয় পক্ষ / ক্রেতা।

আমি ১ম পক্ষ, মেসার্স এরফান ব্রেড এন্ড বিস্কুট ফ্যাক্টরী, ঠিকানা- ৯২/১, নাজিমউদ্দিন রোড, চকবাজার, ঢাকা-১১০০ এর একজন শেয়ার হোল্ডার বিদ্যমান থাকিয়া নগদ টাকার বিশেষ প্রয়োজন হওয়ায় আমি আমার মালিকানার শেয়ার হস্তান্তর করিতে চাহিলে ২য় পক্ষ তাহার মালিকাধীন শেয়ার মূল্য বাবাদ ২,৫০,০০০/- (দুই লক্ষ পঞ্চাশ হাজার) টাকা প্রদান করিতে চাহিলে উক্ত মূল্যই সর্বচ্চো বাজার দর যাচাই করিয়া ২য় পক্ষ ক্রেতার নিকট অদ্য ১১/০৬/২০১৮ইং তারিখে বিক্রয় করিলাম।

চলমান পাতা-২

পাতা-২

উক্ত বেকারির একটি দোকান যাহা নন্দীপাড়ায় অবস্থীত এরফান বেকারি নামে উক্ত দোকান খানার শেয়ার ২য় পক্ষ ১ম পক্ষ মোঃ ময়েজ উদ্দিন এর নিকট হস্তান্তর করিলাম।

মোঃ ময়েজ উদ্দিন এর এরফান বেকারির শেয়ারের কোন প্রকার ঋন থাকিলে ২য় পক্ষ খুরশেদ আলম নিজ দায়ে বহন করিবেন। এবং নন্দীপাড়ায় অবস্থীত ঢাকা বেকারি নামে উক্ত দোকান খানার সকল ঋন ১ম পক্ষ মোঃ ময়েজ উদ্দিন খান বহন করিবেন।

চলমান পাতা-৩

পাতা-৩

এতদ্বার্থে স্বেচ্ছায়, স্বজ্ঞানে, সুস্থ শরীরে, সরল মনে, অন্যের বিনা প্ররোচনায় অত্র দলিল পাঠ করিয়া ও পাঠ করাইয়া, শুনিয়া, উহার সম্যক মর্ম ভালভাবে অবগত হইয়া বিক্রির সমুদয় টাকা নগদ হাতে হাতে বুঝিয়া পাইয়া উপস্থিত স্বাক্ষরকারী স্বাক্ষীগণের মোকাবেলায় অত্র বিক্রয় দলিল আপনার বরাবরে সহি সম্পাদন করিয়া দিলাম। ইতি, তারিখঃ-

সাক্ষীগণঃ

১।

২।

৩।
১ম পক্ষ বিক্রেতার স্বাক্ষর


২য় পক্ষ ক্রেতার স্বাক্ষর

পার্টনারশিপ চুক্তিপত্র দলিল কিভাবে করে

নিম্নে আপনাদের সুবিধার্থে আরেকটি পার্টনারশিপ চুক্তিপত্র দলিলের নমুনা ফরমেট দেওয়া হলো যাতে করে একই পোষ্ট থেকেই অংশীদারি ব্যবসার চুক্তিনামাটিও দেখে নিতে পারেনঃ

বিছমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

“অংশীদারী ব্যবসার চুক্তিনামা দলিল”

অংশীদারী কারবার (ব্যবসা) চুক্তিনামা দলিলটি সম্পাদিত হইয়াছে অদ্য ১৫/০৮/২০১৬ইংতারিখ।
পক্ষগণ
নাম:………….., পিতা:…………………ঠিকানা:………………. জাতীয়তা- বাংলাদেশী, ধর্ম- ইসলাম, পেশা- ব্যবসা।

—–১ম পক্ষ ॥

নাম:………….., পিতা:…………………ঠিকানা:………………. জাতীয়তা- বাংলাদেশী, ধর্ম- ইসলাম, পেশা- ব্যবসা।

—–২য় পক্ষ ॥

অত্র অংশীদারী কারবার (ব্যবসা) চুক্তিনামা দলিলের উপরেল্লিখিত পক্ষগণ উন্নত, সৎ ও সম্ভ্রান্ত বংশীয় ও সমাজ ও ব্যবসায়ী মহলে সুপরিচিত। অত্র অংশীদারী কারবার চুক্তিনামার শর্তাবলীতে উল্লেখিত ব্যবসা অংশীদারী কারবার ভিত্তিতে ব্যবসা পরিচালনা করার বিষয়াদি নিয়া উপরোক্ত পক্ষগণ একত্রে বসিয়া উক্ত বিষয়ে বিস্তারিত আলাপ আলোচনা করিয়া সর্বসম্মতিক্রমে নিম্নলিখিত শর্তাবলী মোতাবেক অত্র প্রতিষ্ঠানটি গড়িয়া তোলার এবং উহা পরিচালনা করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হইল।

“শর্তাবলী”

১। অত্র অংশীদারী কারবার প্রতিষ্ঠানটির নাম “কে কে ফ্যাশান লিঃ” (ক ক ঋঅঝঐওঙঘ খঞউ.) ঠিকানা- মাদারটেক, পোঃ সবুজবাগ, থানা- সবুজবাগ, ঢাকা- ১২১৪।

২। অত্র অংশীদারী কারবার প্রতিষ্ঠানের ব্যবসার সুবিধার জন্য অংশীদারগণের সম্মতিতে যেকোন সময় যেকোন স্থানে অত্র প্রতিষ্ঠানটির অফিস স্থানান্তর করা যাইবে।

৩। উভয় পক্ষ ১৫,০০,০০০/- (পনর লক্ষ) টাকা করিয়া বর্তমানে ব্যবসায় লগ্নি করিবেন। অর্থাৎ ব্যবসার প্রারম্ভিক মূলধন হইতে ৩০,০০,০০০০/- (ত্রিশ লক্ষ) টাকা যাহা উভয় পক্ষ সমহারে বিনিয়োগ করিবেন।

চলমান পাতা- ২

(পাতা-২)

৪। অত্র অংশীদারী কারবার প্রতিষ্ঠানের ব্যবসা ও ইহার আয় ও ব্যয় এবং লাভ লোকসানের হিসাব প্রতি বৎসরের ১লা জানুয়ারী হইতে আরম্ভ করিয়া পরবর্তী বৎসরের ৩১ শে ডিসেম্বর পর্যন্ত এই ১ (এক) বৎসর একটি বাৎসরিক হিসাব (লাভ- লোকসান) এর চূড়ান্ত কালান্তিক হিসাবে নির্ণয় ও নিরূপন করা হইবে। প্রতি তিন মাস অন্তর অত্র অংশীদারী কারবার ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের লাভলোকসানের একটি অন্তবর্তীকালীণ হিসাব সর্বদা প্রণয়ন করা হইবে। যাহাতে প্রতি ৩ (তিন) মাসের আয়-ব্যয় ও লাভ-লোকসানের একটি খসরা হিসাব পরখ করা যাইবে।

৫। অত্র অংশীদারী কারবার প্রতিষ্ঠানের অংশীদারগণের সর্বসম্মতিক্রমে অত্র প্রতিষ্ঠানের এক বা একাধিক ব্যাংক একাউন্ট যে কোন তফসিলি ব্যাংকে খোলা যাইবে এবং ব্যাংক একাউন্ট সদা সর্বদা অত্র প্রতিষ্ঠানের ২ (দুই) জন অংশীদারের যৌথ ও সংযুক্ত স্বাক্ষরে পরিচালিত হইবে এবং যাবতীয় ব্যবসায়ীক লেনদেন উক্ত এক্উান্টের মাধ্যমে পরিচালিত হইবে।

৬। অত্র অংশীদারী কারবার প্রতিষ্ঠানের লাভলোকসানের হার প্রত্যেক অংশীদার নিম্নরূপ হারে স্ব স্ব ভাগে ও অংশে ভোগ করিবেন।
(ক) উখরুল আলম ৫০%
(খ) শামসুল আলম ৫০%
মোটঃ ১০০.০০%

৭। অত্র অংশীদারী কারবার প্রতিষ্ঠানের কোন অংশীদার ব্যক্তিগত ও ইচ্ছামত এবং উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে তাহার কাজে ও কর্মে গাফিলতি, অন্যায় এবং অনাকাঙ্খিত আচরণ করিত পারিবেন না। ইহা দ্বারা কোন লোকসান করিতে পারিবে না। যদি কোন অংশীদার উপরোক্ত কাজে কর্মে বলিয়া প্রমাণিত হয় তাহা হইলে উক্ত অংশীদার এককভাবে উক্ত ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য থাকিবেন।

৮। অত্র অংশীদারী কারবার প্রতিষ্ঠানের এই চুক্তিনামা বা অত্র অংশীদারী কারবার প্রতিষ্ঠানের চুক্তিনামা বলবৎ থাকাকালীণ সময়ের মধ্যে কোন প্রকার আগাম লিখিত অনুমতি গ্রহণ ব্যতিরেকে কোন অংশীদারই সমমনা অন্য কোন ব্যবসা পরিচালনা করিতে পারিবেন না বা অংশীদার হিসাবে যোগদান বা অংশগ্রহণ করিতে পারিবেন না।

চলমান পাতা- ৩

(পাতা- ৩)

৯। অত্র অংশীদারী কারবার প্রতিষ্ঠানের প্রত্যেক অংশীদার, ব্যবস্থাপনা অংশীদার, নিরীক্ষক, হিসাব রক্ষক, অফিসার, কর্মচারী, প্রতিনিধি, আইন উপদেষ্টা বা অত্র প্রতিষ্ঠানের সহিত সম্পৃক্ত যেকোন ব্যক্তি ব্যবসার যাবতীয় প্ল্যান প্রোগ্রাম এবং পলিসি অথবা কর্মকান্ড অত্যন্ত গোনীয়তা ও সার্থকতার সহিত সংরক্ষণ করিবেন।

১০। অত্র অংশীদারী কারবার প্রতিষ্ঠানের কারবারটির অংশীদারগণের সর্বসম্মতিক্রমে যত স্বল্প সময়ের মধ্যে সম্ভব প্রতিষ্ঠানটিকে একটি প্রাঃ লিঃ কোম্পানীতে পরিণত করা হইবে।

১১। অত্র অংশীদারী কারবার চুক্তিনামা দলিলে উল্লেখিত যাবতীয় শর্তাবলীর মধ্যে যদি কোন শর্তাবলী উল্লেখ না থাকে বা অন্তর্ভূক্ত না হইয়া থাকে তাহা হইলে অংশীদারী কারবার আইন ১৯৩২ইং এর বিধান মোতাবেক পরিচালিত হইবে।

অত্র অংশীদারী চুক্তিনামা দলিলে উপরোল্লিখিত শর্তাবলী আমরা নিজেরা পড়িয়া এবং বুঝিয়া স্বজ্ঞানে, সুস্থ্য মস্তিষ্কে অন্যের বিনা প্ররোচনায় ইহার সম্যক মর্ম অর্থ বুঝিয়া অঙ্গীকার এবং ওয়াদাবদ্ধ হইয়া অত্র অংশীদারী কারবার প্রতিষ্ঠানের চুক্তিনামা দলিলসহি সম্পাদন করিলাম। ইতি, তাং- ১৫/০৮/২০১৬ইং

স্বাক্ষীগণের স্বাক্ষর
১।

২।

৩।
পক্ষগণের স্বাক্ষর

১।

২।

?অংশীদারি ব্যবসার চুক্তিপত্র ২০ পেইজের নমুনা দেখে নিন

পেপার্স প্রিন্ট করার নিয়ম

প্রথমে এমএস ওয়ার্ডে উপরের লিখাটি লেখার পর এটিকে পেইজ সেটাপ করে নিতে হবে। পেইজ সেটাপ করার জন্য  প্রথমে মাইক্রোসফট ওয়ার্ডের ফাইল মেনু থেকে পেইজ সেটাপে যেতে হবে বা পেইজ লেআউট (page layout) থেকে মার্জিন (margins) থেকে কাস্টমস (customs) অপশনে যেতে হবে। তারপর পেপার অপশন থেকে লিগ্যাল সাইজ করে দিতে হবে। তারপর margins অপশন থেকে উপরে মানে টপে 4.5 ইঞ্চি রাখতে পারেন, লেফট ও রাইট এ 1ইঞ্চি রাখতে পারেন। তারপর নিচে মানে বোটমে 1.5 ইঞ্চি রাখতে হবে। তারপর পেইজ সেটাপটি ওকে করে দিতে হবে।

এবার আপনি প্রিন্টারে প্রিন্ট করতে পারেন।

যেকোন চুক্তিনামা বাংলাদেশ আইন অনুসারে ৩০০ টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প যা ১০০ টাকার ৩টি ষ্ট্যাম্প পেপারে প্রিন্ট করতে হয়। আপনি তিন পেইজে ভাগ করে প্রিন্ট করে নিতে পারেন। অধিক পেইজ হলে কার্টিজ পেপার ব্যবহার করা যেতে পারে।

শেষ কথা হলোঃ

আশা করি উপরের ফরমেট দেখে আপনাদের যদি এধরনের এগ্রিমেন্ট করার দরকার হয় তাহলে নিজেরাই তৈরি করে নিতে পারবেন।

এ বিষয়ে আর কোন তথ্য জানার দরকার হলে কমেন্ট করে জানাতে পারেন।

ধন্যবাদ লেখাটি পড়ার জন্য।

আরো জানুনঃ-

Quick Bangla

বাংলা তথ্যভিত্তিক ওয়েবসাইট হিসেবে পরিচালিত এই সাইটটি। তাই বাংলায় অনেক ধরনের তথ্যই এখানে পেয়ে যাবেন। আশা করি সঠিক তথ্য বিষয়বস্তু জানতে পারবেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
Close

Adblock Detected

Please Turn off ad blocker