ওয়েবসাইট নলেজটিউটোরিয়াল ভিডিওবাংলা ব্লগ

টিন সার্টিফিকেট সম্পর্কে সকল তথ্য, TIN Certificate Bangladesh info

এই পোষ্টে টিন সার্টিফিকেট সম্পর্কে সকল তথ্য, জানানোর চেষ্টা করব। লেখাটি পড়লে টিন সার্টিফিকেট সম্পর্কিত অনেক প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন। (TIN Certificate Bangladesh info)

টিন সার্টিফিকেট সম্পর্কে সকল তথ্য

নিম্নে লেখায় টিন সার্টিফিকেট সম্পর্কে সকল তথ্য সমূহ তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। টিন সার্টিফিকেট সম্পর্কিত অনেক প্রশ্ন থাকে সাধারণ মানুষের সেই প্রশ্ন উত্তর গুলো একত্রে যেন কেউ জানতে পারে সে হিসেবেই এই আর্টিকেলটি। আশা করি TIN Certificate সম্পর্কে অনেক প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন।

নিম্নে উল্লেখ করা হলো কি কি বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবেঃ-

  • টিন সার্টিফিকেট কি?
  • টিন সার্টিফিকেট কেন করতে হয়?
  • টিন সার্টিফিকেট কিভাবে করব?
  • টিন সার্টিফিকেট বাতিল করা কেন জরুরী?
  • টিন সার্টিফিকেট বাতিল করার নিয়ম?
  • টিন সার্টিফিকেট হারিয়ে গেলে ফিরে পাব কিভাবে?
  • টিন সার্টিফিকেট করে কত টাকা ট্যাক্স দিতে হয়?
  • টিন সার্টিফিকেট করলে সুবিধা গুলো কি কি?
  • টিন সার্টিফিকেট করলে অসুবিধা কি কি?

টিন সার্টিফিকেট কি?

আয়ের একটা অংশ সরকারী খাতে প্রদান করার জন্য টিন সার্টিফিকেট করা হয়ে থাকে। মূলত বিশেষ করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থাকলে গুরুত্বপূর্ন দলিল হিসেবে কাজ করে ও বাধ্যতামূলক ভাবে টিন সার্টিফিকেট করতে হয়। আপনার ইনকাম ট্যাক্স যখন দিতে যাবেন তখন আপনাকে টিন সার্টিফিকেট করে তারপর দিতে হবে।

টিন সার্টিফিকেট কেন করতে হয়?

আপনার ইনকাম এর উপর কর প্রদানের জন্য টিন সার্টিফিকেট করতে হয়। আপনার অনেক প্রয়োজনে টিন সার্টিফিকেট করার প্রয়োজন হতে পারে। যেমন-আপনার যদি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থাকে তাহলে আপনাকে বাধ্যতামূলক ভাবে টিন সার্টিফিকেট করতে হবে। আপনি যদি কোন প্রতিষ্ঠান থেকে কাজ পেতে চান তাহলে আপনাকে আপনার প্রতিষ্ঠানের সরকারী অনুমোদনের সকল কাগজপত্রের সাথে টিন সার্টিফিকেটও প্রদান করতে হবে। টিন সার্টিফিকেট ধারা বুঝানো হয়ে থাকে আপনি আপনার আয়ের একটা অংশ সরকারী খাতে প্রদান করে থাকেন। তাছাড়াও আপনার দরকারে ব্যাংকের কোন কোন কাজে টিন সার্টিফিকেট প্রদান করার প্রয়োজন হতে পারে।

টিন সার্টিফিকেট কিভাবে করব?

টিন সার্টিফিকেট করার জন্য আপনাকে কোন অফিসে যেতে হবে না। আপনি অনলাইনের মাধ্যমেই টিন সার্টিফিকেট করে নিতে পারবেন। টিন সার্টিফিকেট করার জন্য secure.incometax.gov.bd এই ওয়েবসাইটে যান তারপর Register ক্লিক করে  User ID, Password, Retype Password, Security Question Security Answer, Country, Mobile, Email Address, Verification letters এই তথ্য গুলো দিয়ে তারপর Register এ ক্লিক করুন, তারপর e-TIN Activation Code এর মাধ্যমে একটিভ করে আবার লগিং করে আপনার সকল তথ্য দিয়ে ফরম ফিলাপ করে সাবমিট করলেই টিন সার্টিফিকেট হয়ে যাবে।

টিন সার্টিফিকেট করার জন্য ভিডিও টিউটোরিয়ালটি দেখুনঃ

টিন সার্টিফিকেট বাতিল করা কেন জরুরী?

কোন ব্যক্তি যদি নিজ নামে সম্পত্তি রেখে মৃত্যুবরণ করেন আর তিনির নামে যদি টিন সার্টিফিকেট করা থাকে তাহলে টিন সার্টিফিকেটটি বাতিল করার প্রয়োজন রয়েছে, কারন পরবর্তীতে সমস্যা হতে পারে। তাছাড়াও কোন ব্যক্তির যদি আগে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছিল কিন্তু বর্তমানে নেই, তিনি ইনকাম ট্যাক্স দেওয়ার মত অবস্থা না থাকে তাহলেও তিনির টিন সার্টিফিকেট বাতিল করার প্রয়োজন রয়েছে। এছাড়াও যদি কেউ ভুলবশত বা অন্যকোন কারনে টিন সার্টিফিকেট খুলে ছিল যা তিনির এখন ইনকাম ট্যাক্স দেওয়ার মত অবস্থা নেই সেক্ষেত্রেও টিন সার্টিফিকেট বাতিল করার প্রয়োজন রয়েছে।

টিন সার্টিফিকেট বাতিল করার নিয়ম?

টিন সার্টিফিকেট বাতিল করার জন্য আপনাকে উপকর অফিসে যেতে হবে। আমরা যেমন অনলাইনের মাধ্যমে টিন সার্টিফিকেট তৈরি করতে পারি কিন্তু এই টিন সার্টিফিকেট বাতিল করার জন্য অনলাইনে এখনো পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা করা হয়নি। সেক্ষেত্রে আপনাকে টিন সার্টিফিকেট বাতিল করার জন্য উপকর অফিসে যেতে হবে।

টিন সার্টিফিকেট বাতিল করার জন্য যেসব কাগজপত্র সাথে রাখতে হবে তা হলো- জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা জন্মনিবন্ধন, আয়করের ফটোকপি, টিন সার্টিফিকেট, মৃত হলে তার সনদপত্র এবং বাতিলের কারণদর্শানো।

টিন সার্টিফিকেট হারিয়ে গেলে ফিরে পাব কিভাবে?

অনেকেই আছেন যাদের টিন সার্টিফিকেট ছিল কিন্তু হারিয়ে গেছে। এখন অনলাইন থেকে টিন সার্টিফিকেটটি আবার তুলতে পারবেন কিন্তু সেক্ষেত্রে আপনার ইউজার আইডি পাসওয়ার্ড দিয়ে ই-টিন সার্টিফিকেট এর ওয়েবসাইটে লগিং করতে হবে তারপর টিন সার্টিফিকেটটি ডাউনলোড করতে পারবেন কিন্তু আপনার যদি ইউজার আইডি পাসওয়ার্ড মনে না থাকে তাহলে কিভাবে পাবেন। এটার সমাধান হলো আপনি টিন সার্টিফিকেট এর ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখবেন Forgot Password নামের একটি অপশন আছে সেখানে গিয়ে আপনার ইউজার আইডি পাসওয়ার্ড রিকুভারি করতে পারেন বা পূনরুদ্ধার করতে পারেন। কিন্তু রিকুভারি করার জন্য যখন টিন সার্টিফিকেট তৈরি করা হয়েছিল তখন আপনার একটি মোবাইল নাম্বার দেওয়া হয়েছিল সে নাম্বারটি মনে থাকতে হবে বা একটিভ থাকতে হবে যদি মোবাইল নাম্বার না থাকে বা মনে না থাকে অথবা কোন ভাবেই রিকুভারি করা সম্ভব নয় তাহলে টিন সার্টিফিকেট এর ওয়েবসাইটে গেলে দেখবেন   (Helpline:   09611-777111 or 333) তাদের অফিসের মোবাইল নাম্বার দেওয়া আছে সে নাম্বারে ছুটির দিন ব্যতিত অফিস টাইমে ফোন দিয়ে আপনার সমস্যার কথা বললে তারা আপনাকে হেল্প করবে। ফোন দেওয়ার সময় আপনার ভোটার আইডি কার্ডের নাম্বারটি সাথে রাখবেন কারন তারা আপনার ভোটার আইডি কার্ডের নাম্বারটি চাবে।

অথবা এই আর্টিকেলটি পড়ুনঃ- টিন সার্টিফিকেট হারিয়ে গেলে তথ্য ভুলে গেলে অনলাইন থেকে বের করার নিয়ম

টিন সার্টিফিকেট করে কত টাকা ট্যাক্স দিতে হয়?

সরকারী নিয়মে আপনার যদি বৎসরে ৩,০০,০০০ টাকার উপরে আরো ১,০০,০০০ টাকা ইনকাম হয়  তাহলে আয়ের ৫% হারে কর প্রদান করতে হবে, ৩,০০,০০০ টাকায় ১০%, ৪,০০,০০০ টাকায় ১৫%, ৫,০০,০০০ টাকায় ২০%, এর উপরে ২৫% হারে কর প্রদান করতে হবে। 

টিন সার্টিফিকেট করলে সুবিধা গুলো কি কি?

(১) টিন সার্টিফিকেট দিয়ে আপনার আয়কর দিতে পারবেন। যে অর্থ  দেশের উন্নয়নে ব্যবহৃত করা হয়।

(২) টিন সার্টিফিকেট করা থাকলে আপনার যানবাহনে রেজিষ্ট্রেশন করার সুবিধা পাবেন।

(৩) বিবাহ করা বা তালাক দেওয়ার রেজিষ্ট্রেশন এর সুবিধা দ্রুত পাবেন।

(৪) আপনার যেকোন ধরনের লাইসেন্স করতে গেলে দ্রুত সুবিধা পাবেন।

(৫) ক্রেডিট কার্ড দ্রুত ইস্যু করতে পারা যায়।

(৬) পাসপোর্ট তৈরি করতে খুব দ্রুত সেবা পেতে পারেন।

(৭)সরকারি বা বেসরকারি যেকোনো ধরণের সেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন।

 (৮)রাস্তাঘাট, ব্রীজ, সেতু,  কালভার্টের ব্যবহারের সকল সুবিধা আপনি পাবেন।

টিন সার্টিফিকেট করলে অসুবিধা কি কি?

(১) টিন সার্টিফিকেট না থাকলে যেখানে আপনাকে কর প্রদান করতেই হবে সেক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ কর দিতে হয়।

(২) অনলাইনের মাধ্যমে টিন সার্টিফিকেট বাতিল করা যায় না। উপকর অফিসে গিয়ে বাতিল করতে হয়।

(৩) আপনার আয়কর একবার জমা দেওয়ার পর পরবর্তীতে যদি রিটার্ন আয়কর জমা না দেন তাহলে আপনার টাকা কালো টাকা হওয়ার সম্ভবনা রয়ে যায়।

(৪) টিন সার্টিফিকে করার সময় তথ্য ‍ভুল হলে বা আয়কর দেওয়ার সময় তথ্য ভুল দিয়ে বেশ ঝামেলায় পরতে হতে পারে।

(৫) টিন সার্টিফিকেট হারিয়ে গেলে বা চুরি হলেও কিছু ঝামেলায় পরতে হতে পারে।

শেষ কথাঃ

টিন সার্টিফিকেট তৈরি করা একদম সহজ কিন্তু তৈরি করার পর যদি আপনি আয়কর না দেন আর পরবর্তীতে যদি আপনার আয়কর দেওয়ার দরকার পরে সেক্ষেত্রে আপনাকে অনেক জরিমানা দিয়ে অনেক জামেলায় পরতে হতে পারে। কেউ যদি টিন সার্টিফিকেট এমনি এমনি খুলে ফেলেন আর আপনার কাছে মনে হয় আপনি আরো ৫-১০ বছর পর বড় কোন ব্যবসা করবেন কিন্তু এখন আপনার এই সামর্থ নেই সেক্ষেত্রে আপনি কোন উকিলের সাথে পরামর্শ করতে পারেন। আপনি জিরু রিটার্ন দিতে পারেন অথবা সম্পত্তি গুলো দেখিয়ে আয়কর দিতে পারেন। আয়কর দিলে ভবিষ্যতের জন্য ভাল হয়।

আশা করি লেখাটি ভাল লেগেছে, যদি ভাল লেগে থাকে তাহলে কমেন্ট করে জানাতে পারেন।

ধন্যবাদ আর্টিকেলটি পড়ার জন্য।

টিন সার্টিফিকেট এর ইউজার আইডি ভুলে গেলে এই ভিডিওটি দেখুনঃ

হারিয়ে যাওয়া টিন সার্টিফিকেট পাওয়ার উপায়

আরো জানুন-

Quick Bangla

বাংলা তথ্যভিত্তিক ওয়েবসাইট হিসেবে পরিচালিত এই সাইটটি। তাই বাংলায় অনেক ধরনের তথ্যই এখানে পেয়ে যাবেন। আশা করি সঠিক তথ্য বিষয়বস্তু জানতে পারবেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
Close

Adblock Detected

Please Turn off ad blocker