হোস্টিং কেনার আগে যা জানা খুবই প্রয়োজন

ওয়েবসাইটের জন্য হোস্টিং কেনার আগে যে বিষয় গুলো আপনার জানা উচিত, সে বিষয় নিয়ে আজ আলোচনা করব।
সব থেকে আগে বলে নেই হোস্টিং কি? হোস্টিং হচ্ছে আপনি যে ওয়েব সাইট চালাবেন সেটির মেমোরি। আপনি ওয়েব সাইটে যা কিছু রাখবেন তা ওই হোস্টিং এ স্টোরেজ হবে। সহজ ভাষায় বলতে গেলে আমাদের কম্পিউটারের হার্ডডিক্স ও মোবাইলের মেমোরি কার্ড যে কাজটি করে ঠিক তেমনি ওয়েব সাইটের জন্য হোস্টিং সে কাজটি করে। ওয়েব সাইট তৈরি করার পর বা নেওয়ার পর ডোমিন দরকার হয় ডোমিন হল ওয়েব সাইটের নাম। ওয়েব সাইট ও ডোমিন এর পর দরকার হবে হোস্টিং।
আবার হোস্টিং কয়েক ধরনের হয় যেমন-শেয়ার হোস্টিং, ভিপিএস হোস্টিং, ডেডিকেটেড হোস্টিং। প্রাথমিক অবস্থায় শেয়ার হোস্টিং বেশিরভাগ মানুষ ব্যবহার করে থাকে, এই হোস্টিং খুব কম টাকায় পাওয়া যায় বলে, যখন কোন সাইট পপুলার হয়ে যায় বা প্রথম থেকেই বাজেট বেশি থাকে তারা শেয়ার হোস্টিং নেয়া থেকে বিরত থাকে কারন এই হোস্টিংটি হল একটা সার্ভারকে অনেকজনের কাছে বিক্রি করে যেটা অনেক সময় ওয়েব সাইট স্লো হয়ে থাকে এবং নিজের পারসনাল থাকে না।
ডেডিকেটেড হোস্টিং
ডেডিকেটেড হোস্টিং হল এই হোস্টিং প্যানেলে আপনি একটি আইপি পাবেন যা আপনার জন্যই থাকবে অন্য কেউ এই আইপি এড্রেস পাবে না। এই হোস্টিং মূলত তারাই ব্যবহার করে যাদের অনেক বেশি সিকিউরিটি দরকার পরে ওয়েব সাইটের জন্য। যে ওয়েব সাইটে অনেক ভিজিটর থাকে এবং পপুলার যে সব সাইট হয়ে থাকে সেগুলোতেই ডেডিকেটেড হোস্টিং ব্যবহার করা হয়।
ভিপিএস হোস্টিং
ভিপিএস হোস্টিং হল শেয়ার হোস্টিং থেকে আরো ভাল মানের এবং ডেডিকেটেড হোস্টিং থেকে নিম্ন মানের। ডেডিকেটেড হোস্টিং যেমন একজনের জন্য একটি আইপি থাকে এমনি ভিপিএস হোস্টিং হল একটি আইপিকে কয়েকজনকে ভাগ করে দেয়। যেমন ১৬ জিবি র্যামের সার্ভারকে তিনজনের কাছে ভাড়া দেওয়া, যেটা ডেডিকেটেডে একজনই ব্যবহার করে।
এখন চলুন দেখে নেই হোস্টিং কেনার আগে কি কি বিষয় আমাদের জেনে রাখা উচিতঃ
১। কম দামি হোস্টিং কেনা থেকে বিরত থাকুনঃ
আমরা ফেইসবুকে অনেক বিজ্ঞাপন দেখে থাকি খুব অল্প টাকায় ১০ জিবি অথবা ৫ জিবি হোস্টিং নেওয়ার যায়। এসব কম দামি হোস্টিং নেওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত, আমাদের বুঝতে হবে সস্তা কোন কিছুই ভাল হয় না। তারপরও যদি নিতেই হয় কোম্পানী সম্পর্কে ভালভাবে জেনে বুঝে হোস্টিং নিবেন।
২। হোস্টিং স্পেস এবং বেন্ডউইথ বুঝে নিনঃ
আপনি যাদের কাছ থেকে হোস্টিং নিবেন তাদের কাছ থেকে ভাল ভাবে বুঝে নিন আপনার সার্ভারের স্পেস ও বেন্ডউইথ কতটুকু। আপনি সি-প্যানেলে যেয়ে দেখতে পারেন বা চেক করে নিতে পারেন হোস্টিং প্রোভাইডাররা তাদের কথা মত স্পেস ও বেন্ডউইথ দিয়েছে কিনা। বেন্ডউইথ হল মোবাইলের এমবি এর মত কাজ করে। বেন্ডউইথ কম থাকলে বা না থাকলে আপনার ওয়েব সাইট ভিজিটর এর কাছে ওপেন হবে না।
৩। হোস্টিং এর প্রতিষ্ঠানের সম্পর্কে আগে জেনে নিনঃ
আপনি যে প্রতিষ্ঠান থেকে হোস্টিং নিতে চাচ্ছেন আগে এই প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে জেনে নিন। এই প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে চাইলে অনলাইনেও সার্চ করে দেখতে পারেন কি তথ্য পাওয়া যায়। যদি কোন বড় প্রতিষ্ঠান হয়ে থাকে তাহলে তাদের কাছ থেকে হোষ্টিং নেওয়াটা হবে বুদ্ধিমানের কাজ। অল্প টাকায় বেশি হোস্টিং দেওয়া অনেক নিম্নমানের হোস্টিং প্রোভাইডারদের কাছ থেকে দুরে থাকাই মঙ্গল জনক।
৪। কাস্টমার সাপোর্ট কি রকম দেয় দেখে নিনঃ
হোস্টিং কেনার আগে যে প্রতিষ্ঠান থেকে হোস্টিং নিচ্ছেন সে কোম্পানী কাস্টমার সাপোর্ট কি রকম দেয় সেটা আগে যাচাই করে দেখুন। মোবাইল, ফেইসবুক, ইমেইল এর মাধ্যমে তাদেরকে আগে থেকেই দেখুন তারা আপনাকে কি রকম সাপোর্ট দেয় বা কি রকম সময় দেয়। যদি আপনার একটা মেসেজের উত্তর দিতে দুই দিন সময় লেগে যায় তাহলে আপনি যখন তাদের কাছ থেকে হোস্টিং নিবেন আপনার সার্ভার যদি কোন কারনে বন্ধ থাকে তাহলে তাদের কাছ থেকে সে ক্ষেত্রে কিরূপ সাপোর্ট পেতে পারেন আগে বুঝে নিন। যদি কোন কারনে আপনার সার্ভার ডাউন থাকে তাহলে আপনার অনেক ক্ষতি হয়ে যেতে পারে আপনি ভিজিটর হারাতে পারেন।
৫। হোস্টিং ফিচার দেখে কিনুনঃ
আপনি যখনই হোস্টিং নিবেন তখন জেনে নিবেন কত গুলো ই-মেইল সেটাপ দিতে পারবেন আবার কত গুলো সাব-ডোমেইন ব্যবহার করতে পারবেন এই হোস্টিং এর মধ্যে। আপনি যখন হোস্টিং নিবেন তখন হয়তো এই হোস্টিং এর মধ্যে একটিই ওয়েব সাইট ব্যবহার করবেন ভাবছেন কিন্তু পরবর্তীতে যদি আরো ওয়েবসাইট থাকে আপনার সেক্ষেত্রে আপনি এই হোস্টিং এ ব্যবহার করতে পারবেন কিনা জেনে নিবেন।
৬। হোস্টিং বাধ্যকতা ও লিমিটেশন জেনে নিনঃ
আপনি যে হোস্টিংটি নিচ্ছেন তার মধ্যে কি কি লিমিটেশন আছে জেনে নিবেন। অনেক সময় এগুলো উল্লেখ করা থাকে না।
৭। হোস্টিং এর জন্য কন্ট্রোল প্যানেল সম্পর্কে জেনে নিনঃ
হোস্টিং এর সি প্যানেল কেমন হবে জেনে নিবেন এবং দেখে নিবেন। আর আপনি যদি হোস্টিং রি-সেল করতে চান তাহলে একাধিক ইউজার বানানোসহ স্পেস, ব্র্যান্ডউইথ বরাদ্দ এর ব্যাপার জেনে নিবেন।
৮। হোস্টিং আপডেট করার সুবিধা জেনে নিবেনঃ
আপনি হোস্টিং কেনার সময় জেনে নিবেন পরবর্তীতে যদি হোস্টিং বাড়াতে চান সেক্ষেত্রে সয়ংক্রিয়ভাবে আপগ্রেড করে দিতে পারবে কিনা।
৯। হোস্টিং এর মানি ব্যাক গ্যারান্টি সম্পর্কে জেনে নিনঃ
আমাদের অনেক সময় হোস্টিং কেনার পর সেই সার্ভিসটি পছন্দ হচ্ছে না, সেক্ষেত্রে ঐ কোম্পানী মানি ব্যাক গ্যারান্টি দিবে কিনা জেনে নিবেন। ভাল কোম্পানী ৩০ দিন অথবা আরো বেশি দিনের মানি ব্যাক গ্যারান্টি দিয়ে থাকে। যারা মানি ব্যাক গ্যারান্টি দেয় মুলত তাদের কোম্পানী ভাল হয়ে থাকে কারন তারা জানে তাদের হোস্টিং ভাল।
বিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠান থেকে ডোমেইন হোস্টিং কিনুন
আশা করি হোস্টিং কেনার আগে এই লেখা গুলোর তথ্য গুলো জেনে কেনা উচিত। লেখাটি ভাল লেগেছে যদি ভাল লেগে থাকে তাহলে লাইক কমেন্ট শেয়ার করতে পারেন। আল্লাহ হাফেজ।
আরো পড়ুন-
- জিমেইল এড্রেস ও পাসওয়ার্ড ভুলে গেলে কি করণীয়, Gmail password recovery
- ব্রাউজার লক করার উপায় সমূহ, Best chrome browser lock extension
- সৌদি ভিসা চেক করার নতুন নিয়ম, Saudi arabia visa check online
- বিয়ের কার্ড বানানোর নিয়ম, Bangla Biyer Card Format
- ৪০টি অভিজ্ঞতা সনদের ফরমেট, Experience Certificate Format Bangladesh