ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা জায়েজ কোরআন হাদিস থেকে

এই পোষ্টের মাধ্যমে ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা জায়েজ কোরআন হাদিস থেকে জানতে পারবেন। আশা করি যাদের মনে এই প্রশ্ন আছে তারা উত্তর পেয়ে যাবেন। (eid-e-miladunnabi)
ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা কি জায়েজ
ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা অবশ্যই জায়েজ আমাদের আলোচনায় প্রমান করব। আজকে আমরা পবিত্র কোরআন শরীফ ও পবিত্র হাদিস শরীফ থেকে সংক্ষেপে আলোচনা করে আপনাদের বুঝিয়ে দেব, ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা অবশ্যই একটি ইবাদত।
ঈদে মিলাদুন্নবী কাকে বলে?
প্রথমেই জানব ঈদে মিলাদুন্নবী কাকে বলে? ঈদে মিলাদুন্নবী কথাটির অর্থ হলো নবীর জন্মদিনের খুশি। ঈদ মানে খুশি আর মিলাদ মানে জন্ম আর নবী মানে রাসুল সাঃ। পুরো কথাটি ধারায় নবীজি (সাঃ) এর জন্মদিনে খুশি হওয়া। বা খুশি উদযাপন।
ইসলামে খুশি উদযাপন কিভাবে করা হয়
এখন কথা হলো ইসলামে খুশি উদযাপন কিভাবে করা হয়। আমরা দেখে থাকি আমাদের ঈদুল ফিতর বা ঈদুল আযহা কিভাবে পালন করি? আমাদের ঈদের দিন নতুন বা পরিস্কার কাপড় পরি, নামাজ করি, কবর জিয়ারত করি, ভাল খাবার খাই, গরিব দুঃখিদের খাওয়াই ও ইবাদত করি। এই কাজ গুলো আমরা ঈদের খুশিতে করে থাকি।
ইসলামের খুশি উদযাপন হলো যেকোন ভাবেই ইবাদত করা হয়ে থাকে।
ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করাও খুশি উদযাপন করা এবং ইবাদত করা এই হয়ে থাকে।
ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা জায়েজ কোরআন থেকে দলিল
”হে হাবীব (সাঃ) ! আমি আপনাকে সমগ্র বিশ্ববাসীর জন্যে রহমত স্বরূপই প্রেরণ করেছি”।-( সুরা আম্বিয়া: ১০৭)
হে রাসুল সাঃ আপনি বলে দিন , মহান আল্লাহ পাক যে ফজল (অনুগ্রহ) ও রহমত প্রেরণ করেছেন , সেজন্য তারা যেন সন্তুষ্টি প্রকাশ করে আর এটা সবচাইতে উত্তম যা তারা সঞ্চয় করে রাখে !” -(সূরা ইউনূছ: ৫৮)
পবিত্র কোরআনে সুরা আম্বিয়া: ১০৭ এ বলেন আমি সমগ্র বিশ্ববাসীর জন্য রহমত স্বরূপ প্রেরণ করেছেন রাসুল সাঃ কে, তাহলে যেদিনে আমরা রহমত পেলাম সেদিনটি আমাদের মনে করা উচিত নয়? সেদিনটিকে ঘিরে আমাদের আমল করা উচিত নয়?
আবার পবিত্র কোরআন মাজিদে আল্লাহ পাক বলেন রহমত প্রেরন করেছেন তার জন্য সন্তুষ্টি প্রকাশ করতে আর এই সন্তুষ্টি প্রকাশ করা সবচাইতে উত্তম কাজ যেটা সঞ্চয় করে রাখারমত। এখন কথা হলো আল্লাহ নিজেই বলতেছেন রহমত পাওয়ার কারনে সন্তুষ্টি প্রকাশ করতে। এখন আমরা কিভাবে সন্তুষ্টি প্রকাশ করব। আমরা আল্লাহর শান মান তুলে ধরি আমরা নবীজি সাঃ এর শান মান তুলে ধরি আমরা দরুদ শরীফ পড়ি, আমরা আনন্দ প্রকাশ করি বা খুশি হই।
ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা জায়েজ হাদিস থেকে দলিল
হাদিসে আছে-
হযরত অরওয়া ইবনে জুবায়ের (রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু) বলেন,
সুহাইবাহ আবু লাহাবের দাসী ছিল। আবু লাহাব সুহাইবাহ’র কাছে থেকে রাসুল সাঃ এর বেলাদাতের (অর্থাৎ মিলাদুন্নবীর ) সুসংবাদ প্রাপ্ত হয়ে (মিলাদুন্নবীর খুশিতে) সুহাইবাহ কে আযাদ করে দিয়েছিল। যখন আবু লাহাব মৃত্যুবরণ করেছিল তখন (এক বছর পর) তার ঘনিষ্ঠদের কেউ (হযরত আব্বাস রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু) তাকে স্বপ্নে শোচনীয় অবস্থায় দেখে তার উদ্দেশে বলেন, “তোমার অবস্থা কেমন?” আবু লাহাব উত্তরে বলল, “তোমাদের নিকট থেকে আসার পর আমি কোন প্রকার শান্তি পাইনি, কেবল যে দিন রাসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম এর জন্ম হওয়ার খুশিতে অর্থাৎ মিলাদুন্নবীর খুশিতে সুহাইবাকে তর্জনী ও মধ্যমা দু’টি আঙ্গুলের ইশারায় আযাদ করে দিয়েছিলাম, ঐ কারনে প্রতি সোমবার আংগুল দুটির মধ্যে কিছু পানি জমে আমি ঐ পানি (চুষে) পান করে থাকি ও প্রতি সোমবার (জাহান্নামের কঠিন) আযাবকে হাল্কাবোধ করে থাকি।” (বুখারী শরীফ)
এখন কথা হলো কাফের হয়েও নবীজি (সাঃ) এর জন্মদিনে (মিলাদুন্নবীর) খুশি হওয়ার কারনে তার প্রতিদান পায় আল্লাহর কাছে, তাহলে যারা মুসলমান নবীজির জন্ম দিনে খুশি হয়ে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করল, নবীজির উপর দরুদ পাঠ করল তাতে অবশ্যই লাভই হবে।
ঈদে মিলাদুন্নবী নিয়ে বিতর্কের চুড়ান্ত সমাধান নিয়ে আলোচনা করেছেন Saiful Azam Babor Azhari নিম্নের ভিডিওটি দেখুন-
আরো পড়ুন-
- মিলাদ কিয়াম করা জায়েজ কোরআন হাদিস থেকে
- পীর ধরা জায়েজ কোরআন থেকে দলিল
- পীর মুরিদকে জান্নাতে নিতে পারবে, পীর কি শাফায়েত করতে পারবে
- পায়ে ধরে সালাম করা জায়েজ প্রমাণ, কদমবুচি করা জায়েজ কি
- ভূমিকম্প কেন হয়? প্রাণীরা কিভাবে ভূমিকম্পের পূর্বাভাস পায়