পীর মুরিদকে জান্নাতে নিতে পারবে, পীর কি শাফায়েত করতে পারবে

এই পোষ্টের মাধ্যমে পীর মুরিদকে জান্নাতে নিতে পারবে, পীর কি শাফায়েত করতে পারবে জানতে পারবেন। আশা করি প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন।
পীর কি মুরিদকে জান্নাতে নিতে পারবে বা পীর কি শাফায়েত করতে পারবে যদি জানতে চান তাহলে প্রথমেই বলব পীর মুরিদকে জান্নাতে নিতে পারবে অবশ্যই। কিন্তু প্রথমেই জানতে হবে পীর কারা বা পীর কি এবং পীর কাকে বলে।
পীর ফার্সি শব্দ আরবিতে মোর্শেদ বলে যার অর্থ পথ প্রদর্শক। বাংলা অভিধানের মতে- পীর মানে মুসলিম শিক্ষক, পবিত্রলোক, মুসলমান মহাপুরুষ।
কামেল পীর হবেন শরিয়ত ও মারেফাতের পূর্ণ পাবন্দ। তাঁর মধ্যে থাকবে অলৌকিক কারামত। তিনি ধর্ম ও সমাজ সংস্কারক হবেন। তাঁর মুখের প্রতিটি বাণী হবে কলব থেকে উদ্ভাসিত। তিনি নামাজসহ ধর্মের সকল আহকামগুলো নিজে পালন করবেন এবং অনুসারিদেরকেও করাবেন। তিনি মুছকি হাসবেন, স্বল্পভাষী হবেন। ধৈর্য্যশীল, নিরহঙ্কারী হবেন। অন্যকে কটাক্ষ্য করবেন না। মানুষের প্রতি ভালো ব্যবহার ও আচরণ করবেন।
যদি আপনার মনে প্রশ্ন থাকে কামেল পীর বা ওলীগন ও মুমিন ব্যক্তি কি জান্নাতে নিতে পারবে? হে পারবে। নিম্নে হাদিস থেকে দলিল পেশ করা হলো।
পীর মুরিদকে জান্নাতে নিতে পারবে দলিল
দলিল-১
যখন মুমীন আল্লাহর অলীগণ দেখবে যে তারা মুক্তি পেয়ে গেল, তখন তাদের মুমীন ভাইদের জন্য তারা আল্লাহর কাছে আবেদন করবে “হে আমার প্রতিপালক এরা আমাদের ভাই, যাদেরকে তুমি জাহান্নামে নিক্ষেপ করেছ তারা আমাদের সাথে নামাজ পড়ত, আমাদের সাথে রোজা রাখত এবং আমাদের সাথে সত্কাজ করত”।
তখন আল্লাহ বলবেন “যাদের অন্তরে শুধুমাত্র এক দিনার ওজন পরিমাণ ঈমান পাবে তাদেরকে জাহান্নাম থেকে বের করে নিয়ে আস । তাদের মুখমন্ডল তথা আকৃতিকে জাহান্নামের জন্য হারাম করে দেওয়া হয়েছে” ।
অতঃপর তারা অলীগণ সেখানে জাহান্নামীদের নিকট যাবেন । এসে দেখবেন কেউ কেউ পা পর্যন্ত কেউ পায়ের গোড়ালী পর্যন্ত আগুনে ডুবে আছে । এর মধ্যে যাদের তারা চিনবে তাদেরকে জাহান্নাম থেকে বের করে নিয়ে আসবে । (সহীহ বুখারী , খন্ড ২ পৃষ্ঠা ১১০৭ । হাদীস নং ৭০০১)
দলিল-২
হযরত আবূ সাঈদ রঃ হতে বর্ণিত , রাসুল দঃ এরশাদ করেছেন, নিশ্চয়ই আমার উম্মতের মধ্যে এমন কিছু লোক আছেন যারা তাদের সকল সমর্থক ও অনুসারীদের জন্য সুপারিশ করবে । আর কিছু লোক আছেন যারা একটি দলের জন্য সুপারিশ করবে । আর কিছু লোক আছে যারা এক এক জনের জন্য সুপারিশ করবে। এভাবে তারা সকলেই জান্নাতে প্রবেশ করবে । (আল হাদিস, তিরমীযি খন্ড ২ পৃঃ ৬৭, হাদিস ২৪৪০)
দলিল-৩
আল্লাহর প্রিয় বান্দাগণ যখন তাদের ঐ সমস্ত মুমীন ভাই যারা জাহান্নামে পড়ে থাকবে তাদেরকে জাহান্নাম থেকে ছাড়িয়ে আনার জন্য আল্লাহর দরবারে এমনভাবে আবদারের পর আবদার করতে থাকবে, যে রকম আবদার কোন ব্যক্তি তার নিজ হক আদায়ের জন্যও সাধারণত করে না । এবং তারা আল্লাহর দরবারে আবেদন করবেন হে আমাদের রব এ সমস্ত লোক আমাদের সাথে রোজা রাখত, নামাজ পড়ত, হজ্ব করত । তখন তাদেরকে বলা হবে তোমরা যাদেরকে চিন তাদেরকে বের করে নিয়ে আস । (সহীহ মুসলিম । খন্ড ১ পৃষ্ঠা ১০৩ হাদিস ১৮৩)
দলিল-৪
হযরত আলী ইবনে আবি তালিব রঃ হতে বর্ণিত , তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ দঃ এরশাদ করেছেন- যে ব্যক্তি কোরআন শরীফ পাঠ করল এবং মুখস্হ করল, আল্লাহ তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন এবং তাকে তার বংশধর হতে এমন দশজনকে সুপারিশ করতে পারবে যাদের উপর জাহান্নাম ওয়াজিব হয়ে গিয়েছিল । (আল হাদিস. তিরমীজি খন্ড ২ হাদিস ১১৪, ইবনে মাজাহ হাদিস ২১৬)
উপরেউল্লেখিত হাদিস গুলো থেকে বুঝা যায় মমিনলোক আল্লাহর কাছে অন্যদের জন্য সুপারিশ করতে পারবে। আর পীর অবশ্যই মমিনলোক এটা বলার প্রয়োজন পরে না।
তবে হে, কামেল পীরের পাশাপাশি ভন্ড লোকও আছে সমাজে, তাতে করে ভন্ড লোকদের জন্য কামেল পীরকে না মানা বুকামো ছাড়া কিছুই নয়। মসজিদে জুতা চোর গেলে সকল মুসল্লিকে চোর বলা ঠিক নয়।
আরো ভালভাবে জানার জন্য নিচের ভিডিও দেখুন-
আরো পড়ুন-
- পায়ে ধরে সালাম করা জায়েজ প্রমাণ, কদমবুচি করা জায়েজ কি
- রাসুল সাঃ গায়েব জানেন কোরআন ও হাদিস থেকে দলিল
- এত তরিকা বা এত পীরের মানে কী, পীর শব্দটি কি কোরআনে আছে
- যাহার পীর নাই তাহার পীর শয়তান অর্থ কি