টিউটোরিয়াল ভিডিওডকুমেন্ট ফরমেট

কোর্ট ম্যারেজ করার নিয়ম, বিবাহের হলফনামা নমুনা

এই পোষ্টের মাধ্যমে জানব কোর্ট ম্যারেজ করার নিয়ম ও বিবাহের হলফনামা নমুনা সম্পর্কে। কিভাবে বিয়ের হলফনামাটি লিখে ও কত টাকা লাগে জানতে পারবেন।

কোর্ট ম্যারেজ করার নিয়ম

কোর্ট ম্যারেজ করতে হলে যেতে হবে কোন আইনজীবির কাছে। তিনি ২০০ টাকার স্ট্যাম্পে একটি হলফনামায় সই করাবেন বর-কনে দুইজনকে, যাতে লিখা থাকবে আপনারা প্রাপ্তবয়স্ক এবং স্বজ্ঞানে, স্বেচ্ছায় বিয়ে করেছেন।

তারপর কাজীর মাধ্যমে কাবিননামা করতে হবে। যা কাজী সাহেব রেজিস্ট্রী করে দিবেন । “কাজি সাহেবকে আপনাদের জন্ম নিবন্ধন কার্ড বা ন্যাশনাল আইডি কার্ড দেখাতে হবে বয়স প্রমানের জন্য”।

কোট ম্যারেজ করতে কত টাকা লাগে

আপনি যদি কোন আইনজীবির কাছে চলে যান বা কোন নোটারী পাবলিকের কাছে চলে যান তাহলে আপনার নিজে থেকে হলফনামা লিখতে হয় না। তারাই হলফনামা লিখে সই করিয়ে নোটারী করিয়ে আপনার কাছ থেকে তাদের চাওয়া অনুযায়ী টাকা নিয়ে নিবে।

উকিল, নোটারি পাবলিক বা প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিষ্ট্রেটের ফি, স্ট্যাম্প সহ) ২ থেকে ৩ হাজার টাকা নিতে পারে। তবে অনেক সময় এটা কিছু কম বেশি হয়ে থাকে।

তবে আপনার যদি কিছু অভিজ্ঞতা থাকে তাহলে নিজেই তৈরি করতে পারেন বিয়ের হলফনামা। আর হলফনামাটি তৈরি করে প্রিন্ট করে নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে স্বাক্ষর করিয়ে নিতে পারেন। যখন নিজে থেকে করিয়ে নিবেন তখন শুধু উকিলের স্বাক্ষর বাবদ টাকাটি লাগবে।

এখানে খরচ পড়বে দুইটা ১০০টাকার ষ্ট্যাম্প পেপার ও প্রিন্ট খরচ হয়তো ২০ টাকা। আর নোটারী পাবলিক স্বাক্ষর বাবদ সর্বচ্চ ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা নিতে পারে।

বিয়ের কাবিন খরচ কত টাকা লাগে

বিয়ে করতে কত টাকা লাগে যদি জানতে চান তাহলে বলব, ২১ ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখে, বিবাহ রেজিস্ট্রেশন ফি (বিধিমালা), ২০০৯’ সংশোধন করে ফি বাড়ানো হয়েছে।

সুতারাং সংশোধিত বিধিমালা অনুযায়ী সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ফি ২০২৩ , কাবিন নামায় ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত প্রতি হাজারে ১৪ টাকা (লাখে ১৪০০ টাকা) এবং পরবর্তি লাখ বা লাখের অংশবিশেষের জন্য ১০০ টাকা রেজিঃ ফি।

সাথে কাজি সাহেব যাতায়াত খরচ চাইতে পারেন।

কোর্ট ম্যারেজ করতে বয়স কত লাগে

অনেকেই প্রশ্ন করেন কোর্ট ম্যারেজ করতে বয়স কত লাগে? সরকারী আইন অনুযায়ী মেয়ের বয়স ১৮ এবং ছেলের বয়স ২১ হলে কোর্ট ম্যারেজ বা বিয়ে করতে পারবে।

বিয়ের স্ট্যাম্প লেখার নিয়ম

নিজে নিজে হলফনামাটি তৈরি করার জন্য প্রথমে বিবাহের হলফনামাটি লিখতে হবে এমএস ওয়ার্ড ফাইলে। তারপর দুটি একশত টাকার ষ্ট্যাম্প পেপারে প্রিন্ট করতে হবে, প্রিন্ট দেওয়ার আগে পেইজ সেটাপ করে নিতে হবে, সেটাপ করার করার জন্য এম ওয়ার্ড ফাইল এর পেইজ সেটাপ এর অপশনে যেতে হবে তারপর পেইজ সাইজ লিগ্যাল দিতে হবে এবং পেইজ মার্জিন এ টপে-৪.৫ ইঞ্চি দিতে হবে, বোটম এ ১.৫ ইঞ্জি, লেপট এ ১ ইঞ্জি, রাইট এ ১ ইঞ্চি দিতে হবে।

কোর্ট ম্যারেজ করার নিয়ম হিসেবে

নিচে বিবাহের হলফনামা নমুনা ফরমেট দেওয়া হলোঃ-

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
মাননীয় প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিষ্ট্রেট এর আদালত, ঢাকা, বাংলাদেশ
মাননীয় নোটারী পাবলিকের কার্য্যালয়, ঢাকা, বাংলাদেশ।

“বিবাহের হলফনামা”

(কোর্ট ম্যারেজ)

আমরা (১) মোসাঃ ফারিহা, পিতাঃ …………, মাতাঃ …………, স্থায়ী ঠিকানা-গ্রাম- …………, ডাকঘর-…………, থানা-…………, জেলা-…………, বর্তমান ঠিকানা ঃ বাসা/হোল্ডিং-…………, ব্লক-বি, রাস্তা-…………, ডাকঘর…………, গুলশান, ঢাকা সিটি কর্পোরেশন, ঢাকা। জন্ম তারিখ …………ইং, পেশা-চাকুরী, ধর্ম-ইসলাম, জাতীয়তা-বাংলাদেশী।

(২) মোঃ ফখরুল, পিতা-…………, মাতা-মোসাঃ …………, স্থায়ী ঠিকানা- গ্রাম- …………, ডাকঘর-…………, থানা-…………, জেলা-…………। বর্তমান ঠিকানাঃ বাড়ি নং-…………, ডাকঘর-বনানী-১২১৩, গুলশান, ঢাকা সিটি কর্পোরেশন, ঢাকা। জন্ম তারিখ …………, পেশা-চাকুরী, ধর্ম-ইসলাম, জাতীয়তা-বাংলাদেশী।

১. আমরা উভয় হলফ পূর্বক ঘোষণা করিতেছি যে, আমরা বাংলাদেশ সরকারের প্রচলিত আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ও জন্মসূত্রে বাংলাদেশের নাগরিক ও স্থায়ী বাসিন্দা বটে।


২. আমরা উভয়ে মুসলিম পরিবারের সন্তান বটে। আমরা আরও ঘোষণা করিতেছি যে, আমরা উভয়ে প্রাপ্ত বয়স্কা-বয়স্ক, ভাল-মন্দ, বুঝিবার যথেষ্ঠ জ্ঞান সম্পন্ন বটে।


৩. আমরা দীর্ঘদিন যাবৎ একই এলাকায় বসবাস করিয়া আসিতেছি বিধায় আমরা একে অপরের সাথে চলা-ফেরা উঠা বসা করিয়া আসিতেছি তাই আমাদের মধ্যে চেনা জানা আছে, তাই আমরা একে অপরকে গভীর ভাবে ভালবাসি।


৪. আমাদের এই চলাফেরার ফলে উভয় উভয়কে চিনিতে পারিয়াছি। আমাদের এই চেনা জানার সূত্র ধরিয়া একে অপরের সহিত গভীর ভাবে প্রেমে আবদ্ধ হয়েছি। এখন এমন এক পর্যায়ে আসিয়া পৌছিয়াছি যে,ত একে অপরকে ছাড়া এক মুহুর্তের জন্যও থাকিতে পারি না প্রেম স্বর্গীয় অনুভুতি বিধায় আমাদের পবিত্র প্রেম ভালবাসাকে চিরস্থায়ী করার জন্য আমরা উভয়ে এই মর্মে মাননীয় নোটারী পাবলিকের সম্মুখে অত্র হলফনামার মাধ্যমে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিলাম। কারণ আমরা উভয় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হইলে আমরা জীবনে সুখি হইতে পারিব বলিয়া আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস। তাই অদ্য রোজ মাননীয় প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিষ্ট্রেট ও নোটারী পাবলিক ঢাকা, বাংলাদেশ এর কার্যালয়ে উপস্থিত হইয়া অত্র হলফনামার মাধ্যমে কোর্ট অস্থ জামে মসজিদের ইমাম সাহেব এর মাধ্যমে আমরা উভয়ে বিবাহ বন্ধনে আবদ্দ হইলাম এবং অদ্য রোজ স্বাক্ষীগণের মোকাবেলায় মাননীয় নোটারী পাবলিকের সম্মুখে হাজির হইয়া উভয় উভয়কে স্বামী-স্ত্রী হিসাবে গ্রহণ ও বরণ করিয়া নিলাম। অদ্য হইতে আমরা সমাজে স্বামী-স্ত্রী হিসাবে পরিচিত লাভ করিব।


৫. প্রকাশ থাকে যে, আমাদের বিবাহের ব্যাপারে আমাদের উভয়ের পিতা-মাতা আত্মীয়, স্বজন কোনরূপ বাধা প্রদান করিতে পারিবে না যদি করে তাহা সর্ব আইন-আদালতে অগ্রাহ্য ও বাতিল বলিয়া গণ্য হইবে। আমাদের অত্র বিবাহের দেন মোহর ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক ৫০,০০০/- (পঞ্চাশ হাজার) টাকা মাত্র এবং উসুল বাবদ ৩০,০০০/- (ত্রিশ হাজার) টাকা মাত্র খোরপোষ ভদ্রানচিত ভাবে প্রদান করা হবে।

(চলমান পাতা-২)


পাতা-২

৬. আমি ১নং হলফকারিনী ঘোষণা করিতেছি যে, ২নং হলফকারী আমাকে বিবাহের ব্যাপারে কোনরূপ জোর জবরদস্তি করে নাই। সম্পূর্ণ আমাদের উভয়ের ইচ্ছা অনুযায়ী কোর্ট প্রাঙ্গনে অত্র হলফনামার মাধ্যমে বিবাহের ঘোষণা করিলাম এবং কখনো তাহাকে শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন করিব না। তাহাকে যথাযথ স্বামীর মর্যাদা প্রদান করিব এবং আমি কখনো তাহার সহিত খারাপ আচরন করিব না এবং তাহার অবাদ্য হব না। তাহার আদেশ নির্দেশ মানিয়া চলিব। তাহাকে আমি স্বামী হিসাবে কবুল করিলাম।


৭. আমি ২নং হলফকারী ঘোষণা করিতেছি যে, ১ নং হলফকারীনী আমাকে বিবাহের ব্যাপারে কোনরূপ জোর জবরদস্তি করে নাই। সম্পূর্ণ আমাদের উভয়ের ইচ্ছা অনুযায়ী কোর্ট প্রাঙ্গনে অত্র হলফনামার মাধ্যমে বিবাহের ঘোষণা করিলাম এবং কখনো তাহাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করিব না। তাহাকে যথাযথ স্ত্রীর মর্যাদা প্রদান করিব এবং আমি কখনো তাহার সহিত খারাপ আচরণ করিব না এবং তাহার কাছে যৌতুক দাবী করিব না। তাহাকে আমি স্ত্রী হিসাবে কবুল করিলাম।


৮. আমাদের উক্ত বিবাহকে কেন্দ্র করে আমাদের উভয়ের পিতা-মাতা, আত্মীয় স্বজন কোন প্রকার জি.ডি. এন্ট্রি বা হয়রানী মূলক মামলা মোকাদ্দমা করে তাহলে সর্ব আইন-আদালতে অগ্রাহ্য ও বাতিল বলিয়া গণ্য হইবে।


৯. আমাদের উক্ত বিবাহ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের রেজিষ্ট্রারের মাধ্যমে রেজিষ্ট্রী করিতে বাধ্য থাকিব।

উপরোক্ত বর্ণনা আমাদের জ্ঞান ও বিশ্বাস মতে সত্য জানিয়া নোটারী পাবলিকের সম্মুখে হাজির হয়ে অত্র হলফনামায় নিজ নিজ নাম সহি স্বাক্ষর করিলাম।


তারিখঃ / /২০ ইং।

স্বাক্ষীগণের স্বাক্ষর ঃ

১।

২।

৩।

হলফকারীগণের স্বাক্ষর

১নং হলফকারীনীর স্বাক্ষর

২নং হলফকারীর স্বাক্ষর

হলফকারীগণ আমরা পরিচিত।

তাহারা অত্র হলফনামায় নিজ নিজ নাম স্বাক্ষর করিয়াছেন।

আমি তাহাদেরকে সনাক্ত করিলাম।

এডভোকেট

শেষ কথাঃ

আশা করি কোর্ট ম্যারেজ করার নিয়ম জানতে পারলেন। যদি কেউ নিজে নিজে কোর্ট ম্যারেজ করতে চায় সেক্ষেত্রে বিবাহের হলফনামা নমুনা ফরমেটটি দেখে এখান থেকে সহায়তা নিয়ে নিজেই তৈরি করে প্রিন্ট করতে পারেন। যা পরবর্তীতে নোটারী করলেই হয়ে যাবে।

👉ভিডিও দেখুন- কোর্ট ম্যারেজ করার নিয়ম বা বিবাহের হলফনামা লেখার নিয়ম👇

কোর্ট ম্যারেজ করার নিয়ম, বিবাহের হলফনামা লেখার নিয়ম, Court Marriage Stamp Paper

আরো পড়ুন-

Quick Bangla

বাংলা তথ্যভিত্তিক ওয়েবসাইট হিসেবে পরিচালিত এই সাইটটি। তাই বাংলায় অনেক ধরনের তথ্যই এখানে পেয়ে যাবেন। আশা করি সঠিক তথ্য বিষয়বস্তু জানতে পারবেন।

Related Articles

One Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
Close

Adblock Detected

Please Turn off ad blocker