খালি জমি ভাড়ার চুক্তিপত্র, জমির ভাড়া দলিলের নমুনা
এই পোষ্টের মাধ্যমে জমির ভাড়া দলিলের নমুনা পেয়ে যাবেন। যাদের খালি জমি ভাড়ার চুক্তিপত্র করতে হবে তাদের জন্য অনেক সহায়ক হবে আশা করছি।
আমরা ফ্ল্যাট ভাড়া চুক্তিপত্র, দোকান ভাড়া চুক্তিপত্র, অফিস ভাড়া চুক্তিপত্র ও ব্যবসায়ীক চুক্তিপত্র করে থাকি তেমনি আমাদের অনেক সময় শুধু খালি জমি ভাড়ার চুক্তিপত্রও করে থাকি। খালি জমি ভাড়ার চুক্তিপত্র কিভাবে করতে হয় বা জমি ভাড়ার চুক্তিপত্র করার নিয়ম কি যদি জানতে চাই তাহলে আজকের এই পোষ্টটি আপনার কাজে দিবে। কারন এখানে জমির ভাড়া দলিলের নমুনা দেওয়া হবে যা আপনাদের বুঝতে সহজ হবে এবং চাইলে লেখাগুলিকে কপি করে এমএস ওয়ার্ডে নিয়ে পেইজ সেটাপ করে খালি জমি ভাড়ার চুক্তিপত্রটি তৈরি করে নিতে পারেন নিজের মত করে।
নিম্নে খালি জমি ভাড়ার চুক্তিপত্র এর নমুনা ফরমেট তুলে ধরা হলোঃ-
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
খালি জমি ভাড়ার চুক্তিপত্র
(১) মোঃ ফখরুল আলম, পিতা- খুরশেদ আলম, মাতা- মোসাঃ রানুয়ারা বেগম, ঠিকানা- সাতারকুল, বাড্ডা, ঢাকা-২৯৪১, জাতীয় পরিচয়পত্র নং-৫৫৫৫৫৫৫৫
——প্রথম পক্ষ/জমির মালিকগন।
(২) মোঃ হাবিবুর রহমান, পিতা- ওহাব মাতুব্বর, মাতা- ……., ঠিকানা- ……….., বাড্ডা, ঢাকা-২৯৪১, জাতীয় পরিচয়পত্র নং-
——দ্বিতীয় পক্ষ/ভাড়াটিয়াগন।
পরম করুনাময় মহান সর্ব শক্তিমান আল্লাহতায়ালার পবিত্র নাম স্মরন করিয়া অত্র খালি জমির মাসিক ভাড়ার চুক্তিপত্র দলিল লিখিতে আরম্ভ করিলাম। যেহেতু আমরা প্রথম পক্ষ আমাদের স্বত্ত্বদখলীয় ও মালিকানাধীন নিম্নে তফসিল বর্ণিত খালি জায়গা মাসিক ভাড়া দেওয়ার প্রস্তাব করিলে আপনি ২য় পক্ষ উক্ত খালি জায়গা মাসিক ভাড়ায় নিতে রাজি ও সম্মত হইলেন। অতঃপর আমরা উভয় পক্ষ আলাপ আলোচনার মাধ্যমে নি¤েœ উল্লেখিত শর্তে খালি জায়গা মাসিক ভাড়ার অত্র চুক্তিপত্র দলিল সহি সম্পাদন করিলাম।
শর্তাবলী
১। অত্র চুক্তিপত্রের মেয়াদ ০১-০১-২০১৯ইং তারিখ হইতে কার্যকর হইয়া আগামী ০৫ (পাঁচ) বৎসর অর্থাৎ ৩১-১২-২০২৩ইং তারিখ পর্যন্ত বলবৎ থাকিবে। মেয়াদ শেষে উভয় পক্ষ যদি ইচ্ছা প্রকাশ করেন তবে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে নতুন চুক্তিতে আবদ্ধ হইতে পারিবেন।
চলমান পাতা # ০২
পাতা নং # ০২
২। দ্বিতীয় পক্ষের কমবেশী ১৬১৮৭ (ষোল হাজার একশত সাতাশি) বর্গফুটের একটি স্পেশ প্রয়োজন। যাহার প্রথম ৩ (তিন) বৎসরের মাসিক ভাড়া প্রতি বর্গফুট ১৩ (তের) টাকা………………………………. ……………………………………. টাকা নির্ধারিত হইল এবং পরবর্তী ২ (দুই) বৎসরের মাসিক ভাড়া উভয় পক্ষের আলোচনা সাপেক্ষে নির্ধারিত হইবে।
৩। আলোচনার মাধ্যমে অত্র খালি জায়গার অগ্রিম জামানত বাধ্য মং ২,০০,০০০/- (দুই লক্ষ) টাকা নির্ধারিত হইল। যাহা দ্বিতীয় পক্ষ প্রথম পক্ষকে অদ্য নগদে পরিশোধ করিলেন। যাহা মেয়াদ শেষে ১ম পক্ষ ২য় পক্ষের বরাবরে ফেরত দিবেন।
৪। উক্ত খালি জায়গার মাসিক ভাড়া প্রতি চলতি মাসের ১০ (দশ) তারিখের মধ্যে দ্বিতীয় পক্ষ প্রথম পক্ষকে পরিশোধ করিবেন।
৫। এই চুক্তিবলে ভাড়া নেওয়া জমি দেখিয়ে ২য় পক্ষ কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নিকট হইতে অগ্রিম বা ঋণ গ্রহন বা বন্ধক রেখে অর্থ গ্রহণ করতে পারবে না।
৬। জমিতে দ্বিতীয় পক্ষ নিজ খরচে অস্থায়ী ঘর নির্মান করবেন। বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি, সুয়ারেজ টেলিফোন ইত্যাদি লাইন দ্বিতীয় পক্ষ নিজ খরচে সংযোগ নিবেন ও বিদ্যুৎ সহ সব ধরনের বিল সমূহ দ্বিতীয় পক্ষ পরিশোধ করবেন এবং পরিশোধিত বিল সমূহের কপি প্রথম পক্ষ বরাবর প্রতি মাসে দ্বিতীয় পক্ষ বুঝাইয়া দিবেন। বিদ্যুৎ মিটার বা এসব মেধামূলক লাইনের কর্তপক্ষ বা দ্বিতীয় পক্ষের ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃত কোন ঝামেলা করার কারনে যদি কোন দন্ড বা জরিমানা হয় সেটার দায়ভার দ্বিতীয় পক্ষকেই বহন করতে হবে। এটার জন্য প্রথম পক্ষ কোনভাবেই দায়ী হইবে না।
৭। এই চুক্তিনামার বদৌলতে দ্বিতীয় পক্ষের বরাবরে কোন প্রকার মালিকানা সত্ত্ব প্রতিষ্ঠিত হইবে না। ভাড়াটিয়া নিম্নে তফসিল বর্ণিত জমিতে নির্মিত প্রথম পক্ষের দেওয়া প্রদত্ত সময়ের মধ্যে ভাড়া প্রদান করিতে পারিবেন।
৮। অত্র চুক্তি মেয়াদের মধ্যে যদি দ্বিতীয় পক্ষ জমি ছাড়িয়া দিতে চান তবে প্রথম পক্ষকে ৪ মাস (চার মাস) পূর্বে লিখিত নোটিশ দ্বারা অবগত করিবেন। অনুরূপ প্রথম পক্ষ প্রয়োজনে ৪ (চার) মাস পূর্বে ছাড়িয়া দেওয়ার লিখিত নোটিশ করিলে দ্বিতীয় পক্ষ জমি, ঘর, ছাড়িয়া দিতে বাধ্য থাকিবেন।
৯। উক্ত জায়গায় কোনরূপ আইন বহিরভুত কর্মকান্ড বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান করা যাবে না। যদি বেআইনি কিছু করা হয় তাহলে তা দ্বিতীয় পক্ষই দায়ভার থাকবে।
চলমান পাতা # ০৩
পাতা নং # ০৩
১০। সরকারের প্রয়োজনে যদি উক্ত জায়গাটি অধিগ্রহন করা হয় তবে ২য় পক্ষ শুধুমাত্র তাহার নির্মিত স্থাপনার বিল সমূহ পাইবেন। এখানে উল্লেখ্য যে, উক্ত জমিতে ২য় পক্ষের নির্মিত স্থাপনা প্রথম পক্ষের নির্মিত পানির টাঙ্কি ও গাছপালা ইত্যাদির বিল সমূহ প্রথম পক্ষের নামে হবে। এখানে আরোও উল্লেখ্য যে, খালি ভিটা এবং স্থাপনাসহ বাড়ি এই দুইটির মধ্যে যেটিতে সরকার সর্বোচ্চ ক্ষতিপূরন দেয় প্রথম পক্ষ তাহা রেখে বাকী টাকা ২য় পক্ষকে ফেরত দিবেন।
তফসিল
২২৯, সাতারকুল, বাড্ডা, ঢাকা-২৯৪১
এতদ্বার্থে স্বেচ্ছায়, স্বজ্ঞানে অন্যের বিনা প্ররোচনায় অত্র খালি জায়গা ভাড়া চুক্তিনামা দলিল পড়িয়া উহার শর্ত অবগত হইয়া নিম্নে স্বাক্ষীগণের মোকাবেলায় সুস্থ্য শরীরে আমরা উভয়পক্ষ নিজ নিজ নাম স্বাক্ষর করিলাম। ইতি, তাং-
দ্বিতীয় পক্ষের স্বাক্ষর
দ্বিতীয় পক্ষের স্বাক্ষর
স্বাক্ষীগণের স্বাক্ষরঃ
১।
২।
৩।
স্ট্যাম্প পেপারে প্রিন্ট করার নিয়ম
নিজেদের প্রয়োজনে এমএস ওয়ার্ডে লেখার পর এটিকে পেইজ সেটাপ করে নিতে হবে। পেইজ সেটাপ করার জন্য প্রথমে মাইক্রোসফট ওয়ার্ডের পেইজ সেটাপে যেতে হবে, পেইজ লেআউট (page layout) থেকে মার্জিন (margins) থেকে কাস্টমস (customs) অপশনে যেতে হবে। তারপর পেপার অপশন থেকে লিগ্যাল সাইজ করে দিতে হবে। তারপর margins অপশন থেকে উপরে মানে টপে 4.5 ইঞ্চি রাখতে পারেন, লেফট ও রাইট এ 1ইঞ্চি রাখতে পারেন। তারপর নিচে মানে বোটমে 1.5 ইঞ্চি রাখতে হবে। তারপর পেইজ সেটাপটি ওকে করে দিতে হবে।
এবার আপনি প্রিন্টারে প্রিন্ট করতে পারেন। যেকোন চুক্তিপত্র বাংলাদেশ আইন অনুসারে ৩০০ টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প যা ১০০ টাকার ৩টি ষ্ট্যাম্প পেপারে প্রিন্ট করতে হয়। তিনশত টাকার ষ্ট্যাম্প পেপার ছাড়া আইনানুগ গ্রহণযোগ্যতা থাকে না। আপনি তিন পেইজে ভাগ করে প্রিন্ট করে নিতে পারেন।
আরো পড়ুন-