ইসলাম নলেজইসলামিক প্রশ্ন উত্তর

সাঃ রাঃ রহঃ আঃ এর অর্থ কি ও এই শব্দগুলোর পূর্ণরূপ কি?

এই পোষ্টের মাধ্যমে সাঃ রাঃ রহঃ আঃ এর অর্থ কি ও এই শব্দগুলোর পূর্ণরূপ কি? জানতে পারবেন। আশা করি সঠিক উত্তর পেয়ে যাবেন।

আরো ভালভাবে বলতে- এই পোষ্টে জানতে পারবেন সাঃ এর মানে কি? দঃ এর অর্থ কি, রাঃ শব্দের অর্থ কি, আঃ এর অর্থ কি ও (আ) এর পূর্ণরূপ কি, মাঃ জিঃ আঃ এর অর্থ কি, কুঃ ছেঃ আঃ এই শব্দের পূর্ণরূপ কি ও অর্থ কি? দা.বা. এর মানে কি, বিসমিল্লাহ অর্থ কি, আলহামদুলিল্লাহ অর্থ কি, ইনশাআল্লাহ অর্থ কি, মাশাআল্লাহ অর্থ কি, জাযাকাল্লাহু খায়রান অর্থ কি।

সাঃ রাঃ রহঃ আঃ এর অর্থ কি ও এই শব্দগুলোর পূর্ণরূপ কি?

* সাঃ /সঃ/দঃ = এর অর্থ = “সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম”। অর্থ: আল্লাহর তার প্রতি রহমত (দয়া) ও শান্তি বর্ষণ করুন।

* রঃ/রাঃ = এর অর্থ = “রাযিআল্লাহু আনহু”। অর্থাৎ: আল্লাহ তাঁর প্রতি সন্তুষ্ট হোন।

* রহঃ/রাহ. = এর অর্থ =  “রাহিমাহুল্লাহ/রহমাতুল্লাহি আলাইহি”। অর্থাৎ: আল্লাহ তার প্রতি রহম করুন অথবা তার উপর রহমত (দয়া) বর্ষিত হোক।

* আঃ = এর অর্থ =  “আলহিস্ সালাম”। অর্থাৎ: তাঁহার উপর শান্তি বর্ষিত হউক।

এই শব্দগুলো অনেক নবী-রাসূল ও সাহাবী এবং বুযুর্গব্যাক্তির নামের পরে লাগানো হয়।

সাধারণত বাংলা ভাষায় উপরোক্ত শব্দ সংক্ষেপগুলো ব্যবহৃত হয়। কিন্তু আরবীতে পূরো বাক্যই লেখা হয়। এগুলো দ্বারা উদ্দেশ্য হল, দোয়া করা।

মাঃ জিঃ আঃ এর অর্থ কি পূর্ণরূপ কি?

* মাঃ জিঃ আঃ = এর অর্থ = “মাদ্দা-জিল্লুহুল-আলী”। অর্থাৎ: আল্লাহ তাঁর প্রতি সন্তুষ্ট হোন।

বুযুর্গ ব্যক্তির নামের পরে “মাঃ জিঃ আঃ” ব্যবহার করা হয়।

মা: জি: আ: শব্দের পুণ্যরূপ হচ্ছে: = মাদ্দা-জিল্লুহুল-আলী। অর্থাৎ: আল্লাহর ছায়াতলে তাঁকে (বুযুর্গ ব্যক্তিকে) আল্লাহ দীর্ঘজীবী করুক।

মা: মাদ্দা = অর্থ-“দীর্ঘজীবন,”

জি: জিল্লুহুল = অর্থ-“আল্লাহর ছায়া,”

আ: আলী = অর্থ-“উচ্চ বা সম্মানের।”

স্বশ‌রিরে জাহের অবস্থায় মানে কোনো জী‌বিত বুযুর্গ ব্যা‌ক্তির নামের পরে এ‌টি ব্যবহৃত হয়। ত‌বে ওফাতপ্রাপ্ত কারো নামের পরে এই কথাগুলো ব্যবহৃত হবে না।

কুঃ ছেঃ আঃ এই শব্দের পূর্ণরূপ কি ও অর্থ কি?

* কুঃ ছেঃ আঃ = এর অর্থ = “কুদ্দেছা, ছেরহুল, আজিজ”। অর্থাৎ: মহান আল্লাহ্ পাক কতৃক তেনার গোপনীয়তা প্রকাশ পেয়েছেন।

কুঃ কুদ্দেছা, = পবিত্র হয়েছেন।

ছেঃ ছেরহুল=তেনার, গোপনিয়তা।

আঃ আজিজ = মহান আল্লাহ পাক কতৃক।

মোট কথা দারায়; “মহান আল্লাহ্ পাক কতৃক তেনার গোপনিয়তা প্রকাশ পেয়েছেন!”

যেমন- বিশ্ব ওলী খাজাবাবা ফরিদপুরী (কুঃছেঃআঃ) ছাহেব। এই বুযুর্গব্যাক্তির নামের পরে (কুঃছেঃআঃ) ব্যবহার করা হয়।

দা.বা. এই শব্দের পূর্ণরূপ কি ও অর্থ কি?

* দা.বা. = এর অর্থ = “দামাত বারাকাতুহুম”। অর্থাৎ: তার কল্যাণসমূহ স্থায়ী হোক। এটা আবার সম্মান করে বহুবচন হিসেবে দামাত বারাকাতুহুমও বলা হয়। এর অর্থ হল- আল্লাহ তাঁর বরকতসমূহ বাড়িয়ে দিন। অর্থাৎ, আল্লাহ যেন তাঁকে লম্বা হায়াত দেন। তিনি বেশিদিন বেঁচে থাকুন, যাতে করে আমরা তাঁর কাছ থেকে দীনি বিষয়ে উপকার পাই, বরকত লাভ করতে পারি।

চলুন আরো কিছু ইসলামিক শব্দের অর্থ জেনে নেই

* বিসমিল্লাহ =শব্দের অর্থ= “পরম করুণাময়, অসীম দয়াবান আল্লাহর নামে” । ভালো কোন কাজ শুরু করার আগে বিসমিল্লাহ পড়তে হয়। যেকোন মন্দ কাজ ইসলামে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। তাই মন্দকাজে বিসমিল্লাহ পাঠ করার প্রশ্নই আসে না।

“বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম” সংক্ষেপে ‘বিসমিল্লাহ’ নামে পরিচিত।

* আলহামদুলিল্লাহ = শব্দের অর্থ= সমস্ত প্রশংসা মহান আল্লাহর জন্য। যেকোনো উত্তম, আনন্দ ও সুখবরে ভালো কোনো কিছুর জন্য এটি বলা হয়ে থাকে।

পছন্দনীয় কিছু দেখলে বা শুনলে “আলহামদু লিল্লাহিল্লাজি বিনিয়মাতিহি তাতিম্মুস সালিহাত” বলতে হয়। অর্থ : সমস্ত প্রশংসা ওই আল্লাহর, যার করুণায় উত্তম কাজ সম্পন্ন হয়।

আর অপছন্দনীয় অবস্থায় থাকলে কিংবা কিছু দেখলে অথবা শুনলে বলতে হয় “আলহামদুলিল্লাহি আলা কুল্লি হাল”।  অর্থ : যেকোনো অবস্থায় সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য। (সূত্র : তিরমিজি ও ইবনে মাজাহ)

* ইনশাআল্লাহ = ইনশাআল্লাহ শব্দের অর্থ মহান আল্লাহ যদি চান। ভবিষ্যতে হবে, ঘটবে বা করবো- এমন বিষয়ে ইনশাআল্লাহ বলা সুন্নত। যেমন- আগামীকাল এই কাজটি করবো, ইনশাআল্লাহ।

* মাশাআল্লাহ = শব্দের অর্থ= আল্লাহ যেমন চেয়েছেন। আলহামদুলিল্লাহ শব্দের মতোই এটির ব্যবহার। তবে আশ্চর্যজনক কোনো কিছু দেখলে এই শব্দ বলা যায়। অর্থাৎ যেকোনো সুন্দর ও ভালো ব্যাপারে এটি বলা হয়। যেমন- মাশাআল্লাহ, তোমার সবজির বাগানটি অনেক সুন্দর।

* জাযাকাল্লাহু খায়রান = শব্দের অর্থ= “আল্লাহ আপনাকে উত্তম পুরস্কার/প্রতিদান দিন”।

যদি জাযাকাল্লাহু বাক্যটি বলা হয় তাহলে বাক্যাংশটি অসমাপ্ত। কারণ হলো জাযাকা অর্থ হলো পুরস্কার প্রদান, আর আল্লাহ অর্থ সৃষ্টিকর্তা, খায়রান অর্থ হলো ‘উত্তম’। জাযাকাল্লাহু খায়রান বললে কি পুরস্কারের/ প্রতিদানের কথা বলা হল তার অনুমান দরকার পড়ে না কারণ ‘খায়রান’ শব্দটি দ্বারা এটা নির্দিষ্ট হয়ে যায়।

জাযাকাল্লাহু খায়রান আমরা মুসলিমরা ধন্যবাদ জানানোর জন্য বলে থাকি। যদিও ধন্যবাদ জানানোর পরিচিত আরবি শব্দটি হল ‘শুকরান’। জাযাকাল্লাহু খায়রান বাক্যটি মুসলিমরা ব্যবহার করে এই বিশ্বাসে যে, একজন মানুষ অন্যজনকে পর্যাপ্ত বিনিময় দান করতে পারে না বরং সর্বোত্তম পুরস্কার/ প্রতিদান দান করতে সক্ষম মহান আল্লাহ।

আশা করি ইসলামিক কমন কিছু প্রশ্নের উত্তর পেয়েছেন এবং কিছু শব্দের অর্থ জানতে পেরেছেন। লেখাটি ভাল লাগলে কমেন্ট করে জানাতে পারেন। জাযাকাল্লাহু খাইরান।

আরো পড়ুন-

Quick Bangla

বাংলা তথ্যভিত্তিক ওয়েবসাইট হিসেবে পরিচালিত এই সাইটটি। তাই বাংলায় অনেক ধরনের তথ্যই এখানে পেয়ে যাবেন। আশা করি সঠিক তথ্য বিষয়বস্তু জানতে পারবেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
Close

Adblock Detected

Please Turn off ad blocker