রাসুল সাঃ এর নাম শুনে আঙ্গুলে চুমু খাওয়া চোখে মালিশ করার ফজিলত
এই পোষ্টের মাধ্যমে রাসুল সাঃ এর নাম শুনে আঙ্গুলে চুমু খাওয়া চোখে মালিশ করার ফজিলত জানতে পারবেন। আজানে চুমু খাওয়ার বিধান জেনে নিন।
সুপ্রসিদ্ধ কিতাব “মুনরিুল আইন ফী হুকমি তাক্ববলিুল ইবহামাইন” এবং সুপ্রসিদ্ধ কিতাব “জা’আল হ্বক ওযাহাকাল বাতিল” ও অন্যান্য কিতাব সমূহের মধ্যে রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নাম মোবারক আজানে শুনার পর দরূদ শরীফ পড়তঃ আঙ্গুলে চুমু খেয়ে চোখে মালিশ করার ফজিলত দুনিয়া ও আখিরাতে কি রকম বলা হয়েছে।
রাসুলের সাঃ নাম শুনে চোখে চুমু খাওয়া
আল্লাহ পাক কুরআনুল কারীমে ইরশাদ করেন-
আজ (কিয়ামতের দিবস) আমি তাদের মুখে তালা মেরে দেব এবং তাদের হাত কথা বলবে তাদের পা সাক্ষ্য দেবে দুনিয়ার মধ্যে তারা যা অর্জন করেছিল। (সূরা ইয়াসীন-৬৫)
উপরোক্ত আয়াত দ্বারা বুঝা যায়, কিয়ামতের ময়দানে মানুষের হাত, পা কথা বলবে। তারা হাত ও পা কে, কোন কাজে ব্যবহার করেছিল, পক্ষে নাকি বিপক্ষে তথা পূণ্য করেছিল না গুনাহ করে কাজ করেছিল তা আল্লাহর সামনে বলে দিবে।
আর যে উম্মত রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নাম শুনে মহব্বতে আঙ্গুলে চুমু খেয়ে চোখে মালিশ করে অবশ্যই কিয়ামতের ময়দানে সেই আঙ্গুল ও সাক্ষ্য দিবে হয়তো এটাই নাজাত তথা মুক্তির বড় মাধ্যম হতে পারে ।
মানুষ তার ইবাদত বন্দেগীর মাধ্যমে জান্নাত পাবে এর কোন ভিত্তি নেই বরং একমাত্র আল্লাহ তায়ালার দয়ার মাধ্যমইে জান্নাত পাওয়া যায়। আর নবীজির নাম শুনে আঙ্গুলে চুমু খাওয়া কাজটি যেহেতু তার হাবীব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি ভালবাসার বহি:প্রকাশ। সেহেতু আল্লাহ তায়ালা চাইলে তাঁর হাবীবের প্রতি দৃষ্টিপাত করে গুনাহগার উম্মতের উপর রহমত ও দয়া করতে পারেন। যা আমাদের বিশ্বাস যাতে কোনো সন্দেহ নাই।
তাছাড়া রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নাম শুনে আঙ্গুলে চুমু খেয়ে চোখে মালিশ করা যে মুস্তাহাব তার অসংখ্য দলিল ও প্রমাণাদি রয়েছে।
হাদিসে আছে-
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, যে উম্মত আজানে আমার নাম শুনবে অতঃপর আঙ্গুলদ্বয় চোখের মধ্যে রাখবে আমি তাকে কিয়ামতের কাতার থেকে তালাশ করে জান্নাতে নিয়ে যাবো। (সালাতে মাসউদি ২য় খন্ড)
রাসুল সাঃ এর নাম শুনে আঙ্গুলে চুমু খাওয়ার ফজিলত
‘‘হযরত ওয়াহাব ইবনে মুনাব্বাহ (রা:) বলেন, বনী ইসরাঈলের মধ্যে এক ব্যক্তি ছিল অত্যন্ত পাপী, যে ২০০ বছর পর্যন্ত আল্লাহর নাফরমানী করেছে। যখন সে মৃত্যুবরণ করে মানুষেরা তাকে এমন স্থানে নিক্ষেপ করল, যেখানে আবর্জনা ফেলা হতো। তখন হযরত মুসা (আ:) এর প্রতি ওহী এলো যে, লোকটিকে ওখান থেকে তুলে যেন তার ভালভাবে জানাযার নামায পড়ে তাঁকে দাফন করা হয়। হযরত মুসা (আ:) আরজ করলেন, হে আল্লাহ! বনী ইসরাঈল সাক্ষ্য দিচ্ছে যে, লোকটি ২০০ বছর পর্যন্ত তোমার নাফরমানী করেছিল। ইরশাদ হলো, হ্যাঁ, তবে তার একটি ভাল অভ্যাস ছিল। যখন সে তাওরাত শরীফ তেলাওয়াত করতো, যতবার আমার হাবীব হযরত মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ) এর নাম মোবারক দেখত তখন সেটা ততবার চুম্বন করে চোখের উপর রাখত এবং তার প্রতি দুরূদ পাঠ করত। এজন্য আমি তাকে ক্ষমা করে দিয়েছি এবং সত্তর জন হুর স্ত্রী স্বরূপ তাকে দান করেছি।’’
উক্ত হাদীসের ব্যাপারে কোনো মুহাদ্দিস মন্তব্য করেননি। তাদের নীরবতা পালন দ্বারা বুঝা গেল হাদিসটি সহীহ বা বিশুদ্ধ কারণ তার ব্যাপারে কোন মুহাদ্দিসের বিরোধীতা পাওয়া যায়নি।
রেফারেন্স:
ক. ইমাম আবু নঈম : হুলিয়াতুল আউলিয়া : ৩/১৪২ পৃ.
খ. আল্লামা বুরহানুদ্দীন হালভী : সিরাতে হালবিয়্যাহ ১ম খন্ড পৃষ্ঠা-৮৩
গ. আল্লামা শফী উকাড়ভী : জিকরে জামীল : ৩৫৪ পৃষ্ঠা
ঘ. জালালুদ্দীন সুয়ূতি : খাসায়েসুল কোবরা :১/৩০,হাদিস : ৬৮, মাকতুত-তাওফিকহিয়্যাহ, বয়রুত।
ঙ. আল্লামা আবদুর রহমান ছাফূরী : নুযহাতুল মাযালিস : ২/১৪২ পৃ.
চ. আল্লামা দিয়ার বকরী : আল খামীস ফি আহওয়ালে আনফাসে নাফীস : ১/২৮২ পৃ.
শেষ কথাঃ
রাসুলের সাঃ নাম শুনে চোখে চুমু খাওয়া বা রাসূল সাঃ এর নাম শুনে বৃদ্ধাঙ্গুলি অথবা আজানে চুমু খাওয়া যে মানেই জেনে থাকুন না কেন। মূলত কথা হলো নবীজির নাম শুনে বৃদ্ধাঙ্গুলিতে চুমু খেয়ে চোখে মালিশ করাটা হাদিসের দ্বারা প্রমানিত। এবং এই কাজটির দ্বারা প্রিয় নবীজির প্রতি মুহাব্বত প্রকাশ করা হয়।
*** বিশ্বওলী খাজাবাবা ফরিদপুরী (কুঃছেঃআঃ) ছাহেব বলেন- “নবীজীর (সাঃ) মহব্বতই হলো ঈমান। যার অন্তরে রাসূল (সাঃ) এর মহব্বত যতবেশী তার ঈমানও ততবেশী। যার অন্তরে নবীজীর মহব্বত নাই তার ঈমানও নাই। সে সরাসরি বেঈমান।”***
👉👉নবীজির নাম শুনে আঙ্গুলে চুমু খাওয়ার দলিল নিম্নে ভিডিওটি দেখুন-
আরো পড়ুন-
- রাসূল সাঃ সৃষ্টি না হলে কিছুই সৃষ্টি হত না কোরআন হাদিসের দলিল
- নামাজে বুকে হাত বাধার সহিহ হাদিস আছে কি? একটাও নাই
- জানাজার নামাজের পর মুনাজাত করা জায়েজ প্রমাণিত
- ফরজ নামাজের পর মোনাজাতের দলিল সহিহ হাদিসের আলোকে
- পীরকে বাবা বলা জায়েজ কোরআন হাদিস থেকে দলিল
তথ্য সূত্রেঃ
pakpanjatan.net/বৃদ্ধাঙ্গুল-চুমু-দেওয়ার/
ahlesunnatwaljamayatindia.wordpress.com/2017/02/07/nabi-sw-nam-shune-angule-chumu-khaoya-sunnat/