আল্লাহ বিড়াল কেন সৃষ্টি করলেন, বাড়িতে বিড়াল থাকলে কি লাভ হয়
এই পোষ্টে আল্লাহ বিড়াল কেন সৃষ্টি করলেন, বাড়িতে বিড়াল থাকলে কি লাভ হয় জানতে পারবেন। আশা করি লেখাটি ভাল লাগবে।
আল্লাহ কিছু পশু পাখিদের এমনভাবে সৃষ্টি করেছেন যারা মানুষের সাথে মিলেমিশে থাকতে অনেক পছন্দ করে তাদের মধ্যে বিড়াল হচ্ছে অন্যতম। মহান আল্লাহ বিড়ালের মাঝে কিছু বৈশিষ্ট্য দিয়েছেন যার কারণে আল্লাহর সৃষ্ট এমন সুন্দর মাখলুক আমাদের জীবনের একটি অংশ হয়ে থাকে তাদের সেই বৈশিষ্ট্য গুলো আজ আমরা আলোচনা করব।
বাড়িতে বিড়াল থাকলে কি লাভ হয়
আমাদের আশেপাশে দুঃখ দুর্দশা এবং ডিপ্রেশনের এমন একটি মহামায়া সৃষ্টি করে যা আমাদের উপর আধিপত্য বিস্তার করার চেষ্টা করে। একটি গবেষণায় এমন তথ্য পাওয়া যায় যে, আল্লাহতায়ালা বিড়ালের শরীরে এমন একটি ব্যাকটেরিয়া রেখেছেন যা আমাদের আশেপাশে বিদ্যমান থাকা নেগেটিভ এনার্জিকে নিজের মধ্যে শুষে নেয়।
যার কারণে আমাদের মধ্যে থাকা ডিপ্রেশন অনেক অংশে কমে যায়। বিজ্ঞানীদের ভাষ্যমতে যখন আমরা রাত্রিবেলায় ঘুমাতে যাই তখন ঘরের মধ্যে পোষে রাখা বিড়ালটি আমাদের শরীরের সমস্ত নেগেটিভ এনার্জিকে শুষে নেয়। যদি সেই ঘরের মধ্যে কোন জীনের অস্তিত্ব বিদ্যমান থাকে তাহলে আমাদের প্রতিপালক বিড়ালকে এমন শক্তি দিয়েছেন যার মাধ্যমে মোকাবেলা করতে পারে।
সেইসাথে তাদের সাথে থাকা বিদ্যমান যত নেগেটিভ এনার্জি আছে তা সেই বিড়ালটি শুষে নেয়। কিছু কিছু জাতির মধ্যে বিড়ালকে নাপাক প্রাণী হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে, সেই সাথে কিছু কিছু জাতিতে এই প্রাণীকে হালাল মনে করে তা ভক্ষণ পর্যন্ত করা হয়ে থাকে কিন্তু ইসলাম ধর্মে বিড়ালের গোস্ত ভক্ষণ করা নিষেধ করা হয়েছে অন্যদিকে তাদের সাথে ভালোবাসা সহমর্মিতার আচরণ করতে বলা হয়েছে।
রাসুল সাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম এর আব্দুর রহমান নামের একজন সাহাবি ছিল তিনি বিড়াল খুব পছন্দ করতেন একদিন সেই সাহাবি বসে রইলেন আর তিনির কাপড়ের নিচ থেকে একটি বিড়াল বেরিয়ে আসল তখন নবীজি দেখে সেই সাহাবিকে বললেন এই আবু হুরায়রা, মানে বিড়ালের পিতা বা বিড়ালের অভিভাবক, সেই থেকে সে সাহাবির নাম আবু হুরায়রা হয়ে যায়।
কোন ব্যক্তি যদি বিড়ালকে লালন পালন করতে চায় তাহলে সে অবশ্যই কিছু নিয়ম পালন করে। যাতে করে তাদের পানাহারের কোন সমস্যা না হয় এবং তাদেরকে যেন কোন প্রকার ক্ষতি বা কষ্টের সম্মুখীন না হতে হয়। ওমর বিন আব্দুল আজিজ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন একজন মহিলাকে শুধুমাত্র একটি বিড়ালকে কষ্ট দিয়ে মারার কারণে জাহান্নামি করা হয়েছে, কারণ সেই মহিলা নিষ্পাপ বিড়ালটিকে বন্দী করে রেখেছিল এবং সেই সাথে তাকে ছেড়েও দেয়নি যাতে করেছে বিড়ালটি নিজের ব্যবস্থা নিজে করে নিতে পারে।
যার কারণে একটা সময় সে বিড়ালটি ক্ষুধার কষ্টে ধুকে ধুকে নির্মমভাবে মৃত্যুবরণ করে। বিজ্ঞানীরা বিড়ালের উপর গবেষণা করে এই জিনিসটি আবিষ্কার করেছেন যে, আজ থেকে প্রায় আট হাজার বছর পূর্বে জঙ্গলের বিড়ালরা খাবারের সন্ধানে মানুষের বসবাসের জমিতে আসতে শুরু করে ওই সময় সেইসব জমিতে ইদুরের অনেক উৎপাত ছিল তারা সেই সব ইন্দুরের পিছু করতে করতে একসময় তারা মানুষের বসতিতে এসে পৌঁছায়। এর কারণে মানুষ ও বিড়ালের মাঝে এক প্রকার সখ্যতা গড়ে ওঠে এবং তারা আস্তে আস্তে একে অপরের প্রতি আপন হয়ে পড়ে। বর্তমান সময়ে বিড়াল মানুষের পালিত প্রাণীর লিস্টে এক নম্বর স্থানে অবস্থান করছে। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) এরশাদ করেন বিড়াল সর্বদা নাপাক বস্তু থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করে।
বিড়াল হচ্ছে এমন এক প্রাণী যে কিনা মানুষের আশেপাশে ঘুরতে পছন্দ করে। আমাদের প্রিয় নবীও বিড়ালের সঙ্গে খুব ভালো আচরণ করতেন তাই আমাদের উচিত নবীর কার্যকলাপ অনুযায়ী বিড়ালের সাথে ভালো ব্যবহার করা এবং নরম আচরণ করা সেই সাথে আমাদের উচিত আমাদের খানাপিনার যত বস্তু রয়েছে তার অত্যন্ত ভালোভাবে হেফাজত করে বিড়ালকে দেওয়া। সেই সাথে এই দিকটা আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে যাতে করে আমাদের কোন কারণে কোন বিড়াল যাতে কষ্ট না পায়। তবে কোন বিড়াল যদি অনেক হিংস্র হয়ে যায় এবং সেই বিড়াল যদি আপনার কোন ক্ষতি করে তাহলে তাদেরকে অনেক দূরে কোথাও রেখে আসতে পারেন।
শেষ কথাঃ
বিড়ালকে নবীজি (সাঃ) ভালবেসেছেন এবং সাহাবীরা ভালবেসেছেন আমাদেরও উচিত এই প্রাণীকে কষ্ট না দেওয়া এমনকি কোন প্রাণীকেই অকারণে কষ্ট না দেওয়া। আমাদের উচিত যদি বিড়াল পালতে হয় তাহলে যত্ন নেওয়া। আজ তাহলে এ পর্যন্তই আপনারা ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন, আল্লাহ হাফেজ।
আরো পড়ুন-