মেরাজের রাতে রাসুল সাঃ আল্লাহকে দেখেছেন কোরআন হাদিসের দলিল

এই পোষ্টে মেরাজের রাতে রাসুল সাঃ আল্লাহকে দেখেছেন কোরআন হাদিসের দলিল জেনে নিন। আশা করি মিরাজের রজনীর সঠিক ঘটনা জানতে পারবেন।
মেরাজের রাতে রাসুল সাঃ আল্লাহকে দেখেছেন
আল-কুরআনের আলোকে মে’রাজ রাতে মহানবী (দ:) কি আল্লাহকে দেখেছিলেন সে সম্পর্কে
আল্লাহ পাক এরশাদ ফরমান:
তখন সে ঊর্ধ্বদিগন্তে, অতঃপর সে তাহার নিকটবর্তী হইল, অতি নিকটবর্তী, ফলে তাহাদের মধ্যে দুই ধনুকের ব্যবধান রহিল অথবা উহারও কম। তখন আল্লাহ তাঁহার বান্দার প্রতি যাহা ওহী করিবার তাহা ওহী করিলেন। যাহা সে দেখিয়াছে, তাহার অন্তঃকরণ তাহা অস্বীকার করে নাই; সে যাহা দেখিয়াছে তোমরা কি সে বিষয়ে তাহার সঙ্গে বিতর্ক করিবে?” [সূরা নজম, ৭-১২ নং আয়াত]
হাদিসে ব্যাখা হিসেবে-
‘তিনি নেমে এলেন এবং নিকটবর্তী হলেন’, আল্লাহতা’লার এ কালাম (বাণী) সম্পর্কে তিনটি প্রসিদ্ধ ভাষ্য আছে: প্রথমতঃ (তিনি) স্বয়ং আল্লাহ পাক, যা বোখারী ও মুসলিম সহিহাইন গ্রন্থগুলোতে হযরত আনাস বিন মালেক (রাঃ) হতে শারিক বিন আবি নুমাইরের বর্ণিত একখানা রেওয়ায়াতে জ্ঞাত হয়। হযরত আনাস (রাঃ) বলেন, অপ্রতিরোধ্য, সর্বোচ্চ সম্মান ও মহাপরাক্রমশালী প্রভু খোদাতা’লা নেমে আসেন এবং (রাসুল (সাঃ)-এর) সন্নিকটবর্তী হন; এতো কাছে আসেন যে ধনুকের দুই বাহু পরিমাণ দূরত্ব অবশিষ্ট থাকে, বা তারও কম।
[সহীহ আল-বোখারী # ৭৫১৮; মুসলিম # ১৬২]
নবীজির মেরাজের ঘটনা
হাদিসে আছে-
ইবনে শেহাব (রহ:) বলেন: ইবনে হাযম আমাকে জানান যে হযরত ইবনে আব্বাস (রা:) ও আবদ হাব্বা আল-আনসারী (রা:) প্রায়ই বলতেন যে রাসূলুল্লাহ (দ:) এরশাদ ফরমান, অতঃপর তিনি (জিবরীল) আমার সাথে ঊর্ধ্বগমন করেন যতোক্ষণ না আমাকে এতো উচ্চস্থানে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে (তাকদীর লেখার) কলমগুলোর খসখস শব্দ শুনতে পাই। ইবনে হাযম ও হযরত আনাস্ (রা:) বর্ণনা করেন মহানবী (দ:)-এর বাণী, যিনি বলেন: আল্লাহ আমার উম্মতের জন্যে পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামায ফরয (বাধ্যতামূলক) করেছিলেন। অতঃপর আমি ফেরার পথে মূসা (আ:)-কে অতিক্রম করছিলাম। এমতাবস্থায় হযরত মূসা (আ:) আমাকে বলেন, ‘আপনার প্রভুর কাছে ফিরে যান, কেননা আপনার উম্মত এই বোঝা বহন করতে সক্ষম হবে না।’ আমি আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের কাছে ফিরে যাই এবং তিনি ওর থেকে কিছু অংশ মওকুফ করেন। এরপর আমি আবার মূসা (আ:)-এর কাছে গিয়ে তাঁকে এ সম্পর্কে জানাই। তিনি বলেন, ‘আপনার প্রভুর কাছে ফিরে যান, কেননা আপনার উম্মত এই বোঝা বহন করতে সক্ষম হবে না।’ আমি আবার মহান প্রভুর দরবারে ফিরে গেলে তিনি বলেন, ‘এতে আছে পাঁচ (ওয়াক্ত) যা একই সময়ে পঞ্চাশ ওয়াক্তের সমান। যা আদিষ্ট হয়েছে, তা আর পরিবর্তন করা হবে না।’ আমি আবার মূসা (আ:)-এর কাছে গেলে তিনি বলেন, ‘আপনার প্রভুর কাছে ফিরে যান।’ এমতাবস্থায় আমি (তাঁকে) বলি, আমি আমার প্রভুর সামনে লজ্জিত (হায়া-শরমসম্পন্ন)। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৩১৩ – ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত]
ওপরের হাদীসটি নিশ্চিতভাবে প্রমাণ করে যে মহানবী (দ:) আল্লাহ পাককে দেখেছেন, কেননা মূসা (আ:) প্রতিবারই তাঁকে ‘তাঁর প্রভুর কাছে ফিরে যেতে’ বলেছেন এবং অবশেষে মহানবী (দ:) বলেছেন, ‘আমি আমার প্রভুর সামনে লজ্জিত।’
আরো পড়ুন-
- মাজারে সেজদা করা যাবে কিনা কোরআন হাদিস থেকে
- নবী আমাদের মতই মানুষ ছিলেন এই বিশ্বাস কাফেরদের ছিল
- মাযহাব না মানলে ঈমান থাকবে না এই জামানায়
- মহিলারা কবর জিয়ারত করতে পারবে
- পীরের কাছে সাহায্য চাওয়া জায়েজ কেন
তথ্যসূত্রেঃ
sunni-encyclopedia.com/2018/07/blog-post_632.html