ইসলাম নলেজ

৫ ওয়াক্ত নামাজ এর সকল কিছু জানুন (নামায শিক্ষা)

আজ এই লেখাটির মাধ্যমে ৫ ওয়াক্ত নামাজ এর সকল কিছু জানুন। নামায শিক্ষা এর যত নিয়ম কানুন আছে সেগুলো জানতে পারবেন।

আশা করি যারা নামাজ সম্পর্কে জানাতে চান তাদের জন্য এই লেখাটি অনেক উপকারে আসবে। (Namaz Shikkha Bangla)

নামাজের বাহিরে এবং ভিতরে মোট ১৩ ফরজ

নামাজের বাহিরে ৭ ফরজঃ

১। শরীর পাক।

২। কাপড় পাক।

৩। নামাজের জায়গা পাক।

৪। সতর ঢাকা।

৫। ক্বিবলামুখী হওয়া।

৬। ওয়াক্ত মত নামায পড়া।

৭। নামাযের নিয়ত করা।

নামাযের ভিতরে ৬ ফরজ

১। তাকবীরে তাহরীমাহ বলা।

২। দাঁড়াইয়া নামায পড়া।

৩। ক্বিরাআত পড়া।

৪। রুকু করা।

৫। দুই সিজদা করা।

৬। আখিরী বৈঠক।

নামাজের ওয়াজিব ১৪টি

১। আলহামদু শরীফ (সুরায়ে ফাতিহা) সম্পূর্ণ পড়া।

২। সূরা ফাতিহার সঙ্গে সূরা মিলানো।

৩। রুকু-সিজদায় দেরী করা।

৪। রুকু হইতে সোজা হইয়া খাড়া হওয়া।

৫। দুই সিজদার মাঝখানে সোজা হইয়া বসা।

৬। দরমিয়ানী বৈঠক (দুই রাকাআতের পর বসা)।

৭। উভয় বৈঠকে আত্তাহিয়্যাতু পড়া।

৮। ইমামের জন্য ক্বিরআত আস্তে এবং জোরে পড়া।

৯। বেতেরের নামাযে দু’আয়ে কুনুত পড়া।

১০। দুই ঈদের নামাযে ছয় ছয় তাকবীর বলা।

১১। ফরজ নামাযের প্রথম দুই রাক’আতকে কিরাআতের জন্য নির্ধারিত করা।

১২। প্রত্যেক রাক’আতের ফরজগুলির তারতীব ঠিক রাখা।

১৩। প্রত্যেক রাকা’আতের ওয়াজিবগুলির তারতীব ঠিক রাখা।

১৪। আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ (সালাম) বলিয়া নামাজ শেষ করা।

মাসআলা (নামায শিক্ষা)

* সূর্যোদ্বয়ের সময়, দুপুর বেলা মাথার উপর সূর্য থাকার সময় এবং সূর্যাস্তের সময়ে কোন প্রকার নামাযই পড়া জায়েয নাই। তবে বিশেষ কারণে ঐ দিনের আসর নামায সূর্যাস্তের সময় পড়া যায় কিন্তু মাকরূহ হইবে।

* নামাযে যদি উক্ত ফরজসমূহের মধ্য হতে কোনটি ছুটে যায় তাহলে ঐ নামায বাতিল হয়ে যাবে। পুনরায় ঐ নামায পড়তে হবে।

* নামাজের ওয়াজিব সমূহের মধ্য হতে ভুলবশতঃ কোন ওয়াজিব ছুটে গেলে অথবা কোন ওয়াজিব তার নির্ধারিত জায়গা থেকে সরে গেলে সেজদা সাহু ওয়াজিব হয়।

নামাযের সুন্নত সমূহ

নামাযে সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ ১২টিঃ

১। দুই হাত উঠানো।

২। দুই হাত বাঁধা।

৩। ছানা পড়া।

৪। আউজুবিল্লাহ পড়া।

৫। বিসমিল্লাহ পড়া।

৬। আলহামদুর শেষে আমীন বলা।

৭। প্রত্যেক উঠা বসায় আল্লাহ আকবর বলা।

৮। রুকুর তাসবীহ পড়া।

৯। রুকু হইতে উঠিবার সময়, সামি আল্লাহ লিমান হামিদাহ বলা।

১০। সিজদার তাছবীহ পড়া।

১১। দুরুদ শরীফ পড়া।

১২। দু’আয়ে মাছুরাহ পড়া।

নামায আদায় করার সঠিক নিয়ম

ফরজ নামাজগুলি দাঁড়িয়ে পড়া ফরজ। সর্বপ্রথম সর্বাঙ্গ সোজা রেখে কিবলামুখী হয়ে দন্ডায়মান হওয়া।

পুরুষ লোকের নামাজ পড়ার নিয়ম (নামায শিক্ষা)

(১) পুরুষ লোকের সোজা হয়ে উভয় পা সমান্তরাল রেখে দাঁড়ানোর নিয়ম।দাঁড়ানো অবস্থায় উভয় পা সমান্তরাল অর্থাৎ দু পায়ের মাখখানে সমান ফাঁকা রাখা কমপক্ষে চার আঙ্গুল।

(২) উভয় হাত কানের লতি পর্যন্ত উঠানো এবং উভয় হাতের তালু কিবলা মুখি রাখা।হাতের তালু কিবলার দিকে রেখে কানের লতি বরাবর উঠানো সুন্নত, অতঃপর তাকবীরে তাহারীমা ‘আল্লাহু আকবার’ বলা ফরজ।

(৩) উভয় হাত নাভির ঠিক নিচে রেখে ডান হাতের বৃদ্ধা এবং কনিষ্ঠাংগুলি দ্বারা বাম হাতের কব্জি ধরে ডান হাতের মধ্যের তিন আঙ্গুল বাম হাতের পিঠের উপরে থাকবে।

(৪) দাঁড়ানো অবস্থায় চোখের দৃষ্টি সেজদার জায়গায় রাখা। তারপর ছানা পড়া সুন্নত, আউজুবিল্লা পড়া সুন্নত, বিসমিল্লাহ পড়া সুন্নত, সূরা ফাতিহা পুরো পড়া ওয়াজিব। ফাহিতার শেষে আমীন বলা সুন্নত। তারপর সূরা মিলানোর পূর্বে বিসমিল্লাহ পড়া সুন্নত। সূরা মিলানো ওয়াজিব।

(৫) রুকুতে যাওয়ার সময় “আল্লাহু আকবার” বলা সুন্নত। রুকু করা ফরজ। রুকুতে পিঠ, কোমর ও মাথা এক বরাবর রাখা এবং উভয় হাত দিয়ে উভয় হাটু ধরা সে সময় আঙ্গুলগুলি ফাঁক করে রাখা। রুকুতে কমপক্ষে তিন বার তাছবিহ “সুবহানা রব্বিয়াল আযীম” পড়া সুন্নত, রুকু হতে সোজা হয়ে দাঁড়ানো ওয়াজিব। দাড়ানোর সময় ‘সামিআল্লাহু লিমান হামিদা’ বলা তারপর ‘রাব্বানা লাকাল হামদ’ বলা সুন্নত। রুকুতে চোখের দৃষ্টি দুই পায়ের মধ্যভাগে রাখা।

(৬) রুকুর পর দুই সিজদা করা ফরজ। সিজদাতে যাওয়ার সময় “আল্লাহু আকবার” বলা সুন্নত। সিজদা করার সময় প্রথমে মাটিতে হাটু লাগবে তারপর হাত, তারপর নাক পরে কপাল। সিজদাতে কপাল, নাক এবং উভয় পা মাটিতে লাগানো জরুরী এবং সিজদায় তিন বার “সুবহানা রাব্বিয়াল আলা” পড়া সুন্নত। সেজদা অবস্থায় চোখের দৃষ্টি নাকের দিকে নিবন্ধ রাখা এবং হাতের আঙ্গুল গুলি মিশিয়ে রাখা। পেট রান হইতে আলাদা রাখা ও কুনুই মাটি থেকে আলাদা থাকবে। সেজদা হতে উঠার সময় সর্বপ্রথম কপাল তারপর নাক তারপর হাত উঠবে। প্রথম সিজদার পর সোজা হয়ে বসা ওয়াজিব। তারপর দ্বিতীয় সিজদা করা ফরজ।

(৬) নামাজে দুই রাকাত পূর্ণ হলে বসে আত্তাহিয়্যাতু পাঠ করা ওয়াজিব। যদি দুই রাকাত বিশিষ্ট নামাজ হয় তবে আত্তাহিয়্যাতুর পর দুরুদ শরীফ পড়া এবং তার পর দোয়া মাসুরা পড়া সুন্নত। বসা অবস্থায় চোখের দৃস্টি হাতের উপর রাখা এবং আঙ্গুলগুলি স্বাভাবিক অবস্থায় রাখা ও বাম পায়ের উপর বসে ডান পা খাড়া রেখে আঙ্গুল গুলি ভাজ করে কিবলামুখী করে রাখা।

তিন বা চার রাকাত বিশিষ্ট নামাজ হলে দুই রাকাতের সময় আত্তাহিয়্যাতু পড়ার পর আবার দাড়িয়ে বাকী রাকাতগুলি আদায় করবে।

(৭) সালাম ফিরানোর সময় “আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ” বলে চোখের দৃষ্টি ডান হাতের উপর রেখে ঘাড় ফিরানো শুরু করবে এবং কাধের উপর ‍দৃষ্টি রেখে শেষ করবে। ঘাড় সোজা করে বাম দিকেও একই ভাবে সালাম ফিরাবে।সালাম ফিরানো ওয়াজিব।

(৮) সালাম ফিরানোর পর দুরুদ শরীফ ও ইস্তেগফার পাঠ করে মুনাজাত করবে।

মেয়ে লোকের নামাজ পড়ার নিয়ম (নামায শিক্ষা)

মেয়ে লোকেরার নামাজের সকল নিয়ম পুরুষের মতই হবে কিন্তু যেগুলো পুরুষদের থেকে আলাদা রকম হয় সেগুলো নিচে উল্লেখ করা হলোঃ-

(১) মেয়ে লোকের সোজা হয়ে উভয় পা মিশিয়ে দাঁড়ানোর নিয়ম।

(২) উভয় হাত কাঁধ পর্যন্ত উঠানো।

(৩) মেয়ে লোকগন বুকের উপর বামহাত রেখে হালকা ভাবে ডান হাত দ্বারা ধরবে।

(৪) মেয়ে লোকগণ রুকুর মধ্যে সামান্য ঝুকে রুকু আদায় করবে।

(৫) সেজদায় মেয়েলোকগণ শরীর একেবারে মিশিয়ে সেজদা করবে। উভয় কুনুই মাটিতে লাগানো থাকবে।

(৬) মেয়ে লোকগণ নিতম্বের উপর বসবে এবং উভয় পা ডান দিকে বের করে দিবে।

নামায ভঙ্গের কারণসমূহ

নামায ভঙ্গের কারণ ১৯টিঃ

১। নামাযে অশুদ্ধ কিরাত পাঠ করা।

২। নামাজের ভিতর কথা বলা।

৩। কোন লোককে সালাম দেওয়া।

৪। সালামের উত্তর দেওয়া।

৫। উহঃ আহঃ শব্দ করা।

৬। বিনা ওজরে কাশি দেওয়া।

৭। আমলে কাছীর করা।

৮। বিপদে কি বেদনায় শব্দ করিয়া কাঁদা।

৯। তিন তাসবীহ পরিমাণ সময় সতর খুলিয়া থাকা।

১০। মুক্তাদী ব্যতীত অপর ব্যক্তির লোকমা লওয়া।

১১। সুসংবাদ ও দুঃসংবাদের উত্তর দেওয়া।

১২। নাপাক জায়গায় সিজদা করা।

১৩। কিবলার দিক হইতে সিনা ঘুরিয়া যাওয়া।

১৪। নামাযে কুরআন শরীফ দেখিয়া পড়া।

১৫। নামাযে শব্দ করিয়া হাসা।

১৬। নামাযে দুনিয়াবি কোন কিছু প্রার্থনা করা।

১৭। হাঁচির উত্তর দেয়া।

১৮। নামাযে খাওয়া ও পান করা।

১৯। ইমামের আগে মুক্তাদী খাড়া হওয়া। (ঈমাম হইতে মুক্তাদী আগাইয়া দাঁড়ানো।)

নামাযের নিয়ত, দোয়া ও সূরাসমূহ

কিভাবে নামাযের নিয়ত করতে হয়ঃ

নামাযের ইচ্ছা করাই হচ্ছে নামাজের নিয়ত, মুখে উচ্চারণ করা জরুরী নয়, তবে মুস্তাহাব। নিম্নে নামাজের আরবী, বাংলা উচ্চারণ ও নিয়ত দেয়া হলো।

ফজরের নামায শিক্ষা

ফজরের নামায মোট চাররাকাত। যেমন- যথাঃ দুই রাকাত সুন্নত ও দুই রাকাত  ফরয।

প্রথমে দুরাকাত সুন্নত এবং পরে দুরাকাত ফরয আদায় করতে হয়।

ফজরের দুই রাকাত সুন্নতের নিয়ত

উচ্চারণঃ নাওয়াইতু আন উছাল্লিয়া লিল্লাহি তা’আলা রাক’আতাই ছালাতিল ফাজরি সুন্নাতু রাসূলিল্লাহি তা’আলা মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।

অর্থঃ ফজরের দুরাকাত সুন্নত নামায আদায় করার জন্য কেবলামুখী হয়ে নিয়ত করলাম, আল্লাহু আকবার।

ফজরের দুই রাকাত ফরয নামাযের নিয়ত

উচ্চারণঃ নাওয়াইতু আন উছাল্লিয়া লিল্লাহি তা’আলা রাকাতাই ছালাতিল ফাজরি ফারদুল্লাহি তা’আলা মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।

অর্থঃ ফজরের দুই রাকাত ফরয নামায আদায় করার উদ্দেশ্যে কিবলামুখী হয়ে নিয়ত করলাম, আল্লাহু আকবার।

যোহরের নামায শিক্ষা

যোহরের নামায মোট দশ রাকাত। যেমন-প্রথমে চার রাকাত সুন্নত, এরপর চার রাকাত ফরয এবং এরপর দুই রাকাত সুন্নত।

যোহরের চার রাকাত সুন্নত নামাযের নিয়ত

উচ্চারণঃ নাওয়াইতু আন উছাল্লিয়া লিল্লাহি তা’আলা আরবা’আ রাক’আতি ছালাতিয যোহরি সুন্নাতু রাসূলিল্লাহি তা’আলা মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।

অর্থঃ যোহরের চার রাকাত সুন্নত নামায আদায়ের উদ্দেশ্যে কিবলামুখী হয়ে নিয়ত করলাম, আল্লাহু আকবার।

যোহরের চার রাকাত ফরয নামাযের নিয়ত

উচ্চারণঃ নাওয়াইতু আন উছাল্লিয়া লিল্লাহি তা’আলা আরবা’আ রাক’আতি ছালাতিয যোহরি ফারদুল্লাহি তা’আলা মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।

অর্থঃ যোহরের চার রাকাত ফরয নামায আদায় করার জন্য কিবলামুখী হয়ে নিয়ত করলাম, আল্লাহু আকবার।

যোহরের দুই রাকাত সুন্নত নামাযের নিয়ত

উচ্চারণঃ নাওয়াইতু আন উছাল্লিয়া লিল্লাহি তা’আলা রাকাতাই ছালাতিয যোহরে সুন্নাতু রাসূলিল্লাহি তা’আলা মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।

অর্থঃ যোহরের দুই রাকাত সুন্নত নামায আদায় করার জন্য কিবলামুখী হয়ে নিয়ত করলাম, আল্লাহু আকবার।

আছরের নামায শিক্ষা

আছরের নামায মোট আট রাকাত। যেমন- চার রাকাত সুন্নত আর চার রাকাত ফরয।

আছরের চার রাকাত ফরয নামাযের পূর্বে চার রাকাত সুন্নতে যাওয়ায়েদ (অতিরিক্ত) নামায ।কোন লোক যদি আছরের চার রাকাত সুন্নত নামায আদায় করে তাহলে অনেক ছাওয়াব পাবে। আর যদি কোন লোক আদায় না করে তাহলে কোন পাপ হবে না। তবে যেহেতু ছাওয়াব আছে সেহেতু আদায় করা উত্তম।

আছরের চার রাকাত সুন্নত নামাযের নিয়ত

উচ্চারণঃ নাওয়াইতু আন উছাল্লিয়া লিল্লাহি তা’আলা আরবা’আ রাক’আতি ছালাতিল আছরি সুন্নাতু রাসূলিল্লাহি তা’আলা মুতা-ওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।

অর্থঃ আছরের চার রাকাত সুন্নত নামায আদায় করার জন্য কিবলামুখী হয়ে নিয়ত করলাম, আল্লাহু আকবার।

আছরের চার রাকাত ফরজ নামাযের নিয়ত

উচ্চারণঃ নাওয়াইতু আন উছাল্লিয়া লিল্লাহি তা’আলা আরবা’আ রাক’আতি ছালাতিল আছরি

ফারদুল্লাহি তা’আলা মুতা-ওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।

অর্থঃ আছরের চার রাকাত ফরজ নামায আদায় করার জন্য কিবলামুখী হয়ে নিয়ত করলাম, আল্লাহু আকবার।

মাগরিবের নামায শিক্ষা

মাগরিবের নামায মোট পাঁচ রাকাত। যেমন- প্রথমে তিন রাকাত ফরয আর এরপর দুই রাকাত সুন্নত।

মাগরিবের তিন রাকাত ফরয নামাযের নিয়ত

উচ্চারণঃ নাওয়াইতু আন উছাল্লিয়া লিল্লাহি তা’আলা ছালাছা রাক’আতি ছালাতিল মাগরিবি ফারদুল্লাহি তা’আলা মুতা-ওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।

অর্থঃ মাগরিবের তিন রাকাত ফরজ নামায আদায় করার জন্য কিবলামুখী হয়ে নিয়ত করলাম, আল্লাহু আকবার।

মাগরিবের দুই রাকাত সুন্নত নামাযের নিয়ত

উচ্চারণঃ নাওয়াইতু আন উছাল্লিয়া লিল্লাহি তা’আলা রাকাতাই ছালাতিল মাগরিবি সুন্নাতু রাসূলিল্লাহি  তা’আলা মুতা-ওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।

অর্থঃ মাগরিবের দুই রাকাত সুন্নত নামায আদায় করার জন্য কিবলামুখী হয়ে নিয়ত করলাম, আল্লাহু আকবার।

এশার নামায শিক্ষা

এশার নামায মোট দশ রাকাত। যেমন- চার রাকাত সুন্নত, চার রাকাত ফরয ও দুই রাকাত সুন্নত।

এশার নামাযের পূর্বেও আছরের নামাযের ন্যায় চার রাকাত সুন্নাতে যায়েদাহ নামায আদায় করলে অসংখ্য ছাওয়াব পাওয়া যায়। আর না পড়লে কোন গুনাহ হবে না, তবে সময় থাকলে পড়ে নেয়া ভাল।

প্রকাশ থাকে যে, বেতের নামায যদিও পৃথক সময়ের নামায, কিন্তু এ নামায মানুষ সাধারণত এশার নামাযের সাথেই আদায় করে থাকে বলে এ তিন রাকাত বেতের নামাযকে এশার নামাযের পরে উল্লেখ করা হলো।

এশার চার রাকাত সুন্নত নামাযের নিয়ত

উচ্চারণঃ নাওয়াইতু আন উছাল্লিয়া লিল্লাহি তা’আলা আরবা’আ রাক’আতি ছালাতিল এশায়ে সুন্নাতু রাসূলিল্লাহি

তা’আলা মুতা-ওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।

অর্থঃ এশার চার রাকাত সুন্নত নামায আদায় করার জন্য কিবলামুখী হয়ে নিয়ত করলাম, আল্লাহু আকবার।

এশার চার রাকাত ফরয নামাযের নিয়ত

উচ্চারণঃ নাওয়াইতু আন উছাল্লিয়া লিল্লাহি তা’আলা আরবা’আ রাক’আতি ছালাতিল এশায়ে ফারদুল্লাহি

তা’আলা মুতা-ওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।

অর্থঃ এশার চার রাকাত ফরয নামায আদায় করার জন্য কিবলামুখী হয়ে নিয়ত করলাম, আল্লাহু আকবার।

এশার দুই রাকাত সুন্নত নামাযের নিয়ত

উচ্চারণঃ নাওয়াইতু আন উছাল্লিয়া লিল্লাহি তা’আলা রাকাতাই ছালাতিল এশায়ে সুন্নাতু রাসূলিল্লাহি

তা’আলা মুতা-ওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।

অর্থঃ এশার দুই রাকাত সুন্নত নামায আদায় করার জন্য কিবলামুখী হয়ে নিয়ত করলাম, আল্লাহু আকবার।

বেতের নামাযের সময় ও নিয়ম

বিভিন্ন ইমাম সাহেবগণের মতে বেতেরের নামায এশার নামাযের পর হতে সুবহি সাদিকের পূর্ব মুহুর্ত পর্যন্ত থাকে। কিন্তু আমাদের ইমাম আবু হানিফা (রাঃ) এর মতে এশার ও বেতর নামাযের একই সময়। (দররুল মুখতার)

বেতেরের নামায নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই আদায় করতে হয়। কিন্তু যারা শেষ রাতে তাহাজ্জুদ নামায আদায়ের উদ্দেশ্যে জাগ্রত থাকার অভ্যাস করেছেন, কেবল ঐ সব লোকেরাই শেষ রাতে তাহাজ্জুদের পর বেতেরের নামায আদায় করতে পারেন। কেননা রাসূলে কারীম (সাঃ) এ নিয়মেই আদায় করতেন। আর যাদের শেষ রাতে ঘুম হতে জাগ্রত হওয়ার অভ্যাস নেই, তারা অবশ্যই এশার নামাযের সাথেই আদায় করবে।

বেতরের তিন রাকাত নামাযের নিয়ত করে তাকবীরে তাহরীমা বেধে যথারীতি দুই রাকাত এর বসে তাশাহুদ পাঠ করে দাঁড়িয়ে তৃতীয় রাকআতে সূরা-কিরাআত পাঠ করে পুনরায় তাহরীমা বেধে দোয়ায়ে কুনুত পাঠ করে যথারীতি রুকু- সিজদা  ও শেষ বৈঠকের পর সালাম ফিরিয়ে নামায সমাপ্ত করবে। 

তিন রাকাত বেতের নামাযের নিয়ত

উচ্চারণঃ নাওয়াইতু আন উছাল্লিয়া লিল্লাহি তা’আলা ছালাছা রাক’আতি ছালাতিল বেতের ওয়াজিবুল্লাহি তা’আলা মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।

অর্থঃ তিন রাকাত বেতের ওয়াজিব নামায আদায় করার জন্য কিবলামুখী হয়ে নিয়ত করলাম, আল্লাহু আকবার।

জুমআর নামায

জুমার দিন যোহরের নামাযের পরিবর্তে দুই রাকআত জুমআর নামায আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের উপর ফরজ। ইহার ওয়াক্ত যোহরের ওয়াক্তের সময়। জুমআর দিন দুপুরে গোসল করিয়া পরিস্কার পোষাক পরিধান করিয়া আযানের সাথে সাথে মসজিদে উপস্থিত হইয়া জুমআর নামায আদায় করিতে হয়।

জুমআর নামাযের রাকাআত সংখ্যাঃ

চার রাকাত কাবলাল ‍জুমআ, তারপর দুই খুতবা পাঠের পর দুই রাকাত ফরজ নামাজ তারপর চার রাকাত বা’দাল জুমআ আদায় করতে হয়। জুমআর দিন সময় থাকলে তাহিয়্যাতুল অজু, দুখলুল মসজিদ, সুন্নতুল ওয়াক্ত ও নফল নামাজ আদায় করা উত্তম। কিন্তু ঐ নামাজগুলি জুমআর নামাজের সাথে সম্পৃক্ত নয়।

চার রাকাত কাবলাল জুমআর নিয়তঃ

উচ্চারণঃ নাওয়াইতু আন উছাল্লিয়া লিল্লাহি তাআলা আরবায়া রাকআতি ছালাতিল কাবলাল জুমআতি সুন্নাতু রাসূলিল্লাহি তাআলা, মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।

বাংলা নিয়তঃ আমি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ক্বেবলামুখী হইয়া চার রাকআত ক্বাবলাল জুমআ সুন্নাত নামায আদায় করিতেছি, আল্লাহু আকবার।

দুই রাকাত জুমআর ফরজের নিয়তঃ

উচ্চারণঃ নাওয়াইতু আন উসকিতা আ’ন যিম্মাতি ফারদুজ্জুহরী বিআদায়ি রাকআতাই ছালাতিল জুমুআতি ফারদুল্লাহি তাআলা ইক্বতাদাইতু বিহাযাল ইমামি মুতাওয়াজজিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারিফাতি আল্লাহু আকবার।

বাংলা নিয়তঃ আমি আল্লাহর জন্য ক্বেবলা মুখী হইয়া আমার উপর যোহরের ফরজ নামায উত্তীর্ণ করিতে জুমআর দুই রাকআত ফরজ নামায এই ইমামের পিছনে পড়িতে নিয়ত করিলাম, আল্লাহু আকবার।

চার রাকাত বা’দাল জুমআর নিয়তঃ

উচ্চারণঃ নাওয়াইতু আন উছাল্লিয়া লিল্লাহি তাআলা আরবায়া রাকআতি ছালাতিল বা’দাল জুমআতি সুন্নাতু রাসূলিল্লাহি তাআলা, মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।

বাংলা নিয়তঃ আমি আল্লাহর জন্য ক্বেবলামুখী হইয়া চার রাকআত বা’দাল জুমআ সুন্নাত নামায আদায় করিতেছি, আল্লাহু আকবার।

আরো জানুন-

Quick Bangla

বাংলা তথ্যভিত্তিক ওয়েবসাইট হিসেবে পরিচালিত এই সাইটটি। তাই বাংলায় অনেক ধরনের তথ্যই এখানে পেয়ে যাবেন। আশা করি সঠিক তথ্য বিষয়বস্তু জানতে পারবেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
Close

Adblock Detected

Please Turn off ad blocker