পীর আউলিয়ার ওরস শরীফ জায়েজ ইসলামের দৃষ্টিতে
এই পোষ্টে পীর আউলিয়ার ওরস শরীফ জায়েজ ইসলামের দৃষ্টিতে জানতে পারবেন। আশা করি উরস সম্পর্কে অনেক প্রশ্নের উত্তর পাবেন।
ওরস শব্দের অর্থ কি
ওরস আরবী শব্দ। এর অর্থ মিলন। কোন বুযুর্গ বা পীরের মাযারে তাঁর মৃত্যূ দিবস পালনের নামে ধর্মীয় জলসা বা মাহফিল আয়োজন করা। এবং তাঁর ভক্ত জনগনের মিলন ভিড় অর্থাৎ একটি মিলন মেলার রূপ ধারণ করা।
ওসর শরীফ কেন বলা হয়
বুযুর্গগানে দ্বীন-এর ওফাত দিবসকে ‘ওরস’ বলা হয়। এর ভিত্তি হাদীসে পাকে বর্ণিত আছে, মুন্কার ও নাকীর যখন মৃত ব্যক্তির কবরে এসে প্রশ্ন করবে, তখন ওই প্রশ্নের সঠিক উত্তর প্রদান করতে সক্ষম হলে মৃত ব্যক্তিকে বলা হয়- ওই দুলহানের মত ঘুমিয়ে পড়, যাকে পরিবারে তার প্রিয়তম ব্যক্তি ব্যতীত অন্য কেউ জাগাবে না। ওই দিন মুন্কার ও নাকীর ফিরিশ্তাদ্বয় তাকে ‘আরূস’ নামে আখ্যায়িত করে। এ জন্য ওই ওফাত দিবসকে ‘ওরস’ বলা হয়।
অথবা মৃত ব্যক্তি নেক্কার হওয়ার কারণে বিশেষ করে বুযুর্গ হওয়াতে কবরের মধ্যে হুযূর-ই আক্রাম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর নূরানী সৌন্দর্য দেখার সৌভাগ্য হবে, ওই দিনকে ‘ওরস’ এর দিন বলা হয়।
পীর আউলিয়ার ওরস শরীফ জায়েজ
প্রতি বছর ওফাত দিবসে মৃত ব্যক্তি কবর বা আউলিয়া-ই কেরামের মাযার যিয়ারত করা, ক্বোরআন তিলাওয়াত, সাদ্ক্বা-খায়রাত, হালাল পশু যবেহ করে তাবাররুকের ব্যবস্থা করা হয়। এ সমস্ত কাজ ‘ওরস’ উপলক্ষে করা হয়। শরীয়ত মতে এসব কর্মসূচি শুধু বৈধ নয়, বরং অনেক সাওয়াবের কাজও।
ইবনে আবী শায়বাহ্ রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুর বর্ণনা-
নিশ্চয় নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম প্রত্যেক বছরের মাথায় উহুদের শহীদগণের কবরগুলোর নিকট তাশরীফ নিয়ে যেতেন।
যেহেতু রাসুল সাঃ নির্দিষ্ট তারিখে উহুদের শহীদগণের কবর জিয়ারত করতে যেতেন এবং সওয়াব রেশানি করতেন তাই উম্মতেরও কোন নেক বান্দার কামেল মোকাম্মেল আল্লাহর ওলীর ওফাত দিবসে মাজার শরীফ জিয়ারত করা বৈধ এবং রাসুলের সুন্নাত। সে হিসেবে উরস শরীফ পালন করা জায়েজ এবং ইসলামিক দৃষ্টিতে বৈধ।
বিশ্বওলী খাজাবাবা ফরিদপুরী (কুঃছেঃআঃ) ছাহেব উরস নিয়ে যা বলেন–
“যে সকল সাধক বেলায়েতের নবুয়ত ও কামালাতে নবুয়তের মর্যাদাপ্রাপ্ত-তাহারাই স্বীকৃতি প্রাপ্ত ওলি আল্লাহ। কেবলমাত্র তাঁহাদের দ্বারাই যদি উরস পরিচালিত হয়, তবেই তাহা কবুলিয়তের যোগ্যতা প্রাপ্ত হয়।” (সূত্রঃ নসিহতঃ খন্ড-২১; নসিহত নং-১৩০)
“নবী-রাসূল (আঃ) ও ওলী-আলাহগণের আরওয়াহপাকে ছওয়াব রেছানী করা প্রত্যেক মােসলমানেরই কর্তব্য। কারণ তাহারা আল্লাহর রহমতস্বরূপ। তাহাদের অছিলাতেই আল্লাহপাক তদীয় সৃষ্টির প্রতি রহমত বিতরণ অব্যাহত রাখিয়াছেন তাহাদের অছিলাতেই জমিতে ফসল হয়, পানিতে মাছ হয়, গাছে ফল হয়, আকাশ হইতে মিঠা পানি বর্ষে তাঁহাদের অছিলাতেই মানুষ আল্লাহর পরিচয় জ্ঞান অর্জন করে। তাই তাহাদের আরওয়াহপাকে ছওয়াব নজরানা দেওয়া দুনিয়াবাসী মােসলমানবর্গের নৈতিক দায়িত্ব।”
আরো পড়ুন-
- উসিলা ধরা জায়েজ কোরআন হাদিস থেকে দলিল
- রাসুল সাঃ মেরাজের রাতে আল্লাহকে দেখেছেন কোরআন হাদিসের দলিল
- মাজারে সেজদা করা যাবে কিনা কোরআন হাদিস থেকে
- নবী আমাদের মতই মানুষ ছিলেন এই বিশ্বাস কাফেরদের ছিল
- মাযহাব না মানলে ঈমান থাকবে না এই জামানায়
তথ্য সূত্রেঃ
islamicstudies24.wordpress.com/2018/07/14/ওরশ-মোবারক-জায়েয-কিনা/